Monday | 27 October 2025 | Reg No- 06
Epaper | English
   
English | Monday | 27 October 2025 | Epaper
BREAKING: জামালপুরে অটোরিকশা-কাভার্ড ভ্যান সংঘর্ষে নিহত ৪      সংস্কার নভেম্বরের মধ্যে শেষ করার তথ্য সঠিক নয়      কাদের নিয়ে বিএনপি জোট করবে জানালেন সালাহউদ্দিন      সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা প্রকাশ      জ্বালানি সংকটে মালিতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা      উত্তরা-মতিঝিল মেট্রোরেল চলাচল শুরু      ড্যাফোডিল-সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ, ভাংচুর-যানবাহনে অগ্নিসংযোগ       

দুই মাস জেলেদের ‘বাধ্যতামূলক অবসর’

Published : Tuesday, 4 March, 2025 at 3:14 PM  Count : 257

উপকূলের বৃহৎ জেলে সম্প্রদায়ের এ এক অনিশ্চিত জীবন। নদী-সমুদ্রে মাছ ধরা এক সময় ভালো উপার্জনের পেশা হিসেবে পরিচিত থাকলেও এখন এটি ‘মৌসুমী’ পেশায় পরিণত হতে চলেছে। টানা দু’দুটি মাস পেশায় বিরতি। 

এমনিতে সপ্তাহে একটি দিনও বিরতি পাওয়া না গেলেও এই দুই মাস যেন তাদের জন্য ‘বাধ্যতামূলক অবসর’। কিন্তু অবসর তো দিলেন, অবসরকালে কি খেয়ে বেঁচে থাকবেন মানুষগুলো? 

জেলেদের জীবনে বছরে বিভিন্ন অজুহাতে ১০ মাস ৮৭ দিন নিষেধাজ্ঞা আসে। তবে মার্চ-এপ্রিলের সময়টা একটু বেশিই দুঃসময়ের। প্রতি বছর জেলেদের দুঃসময়ের গল্প শুনি। জীবিকার প্রয়োজনে নদী, সমুদ্রে ব্যস্ত থাকা এই মানুষগুলো নিষিদ্ধ সময়কালে হাত-পা গুটিয়ে ঘরে বসে থাকেন। এই সময়ে কেউ জমানো টাকা
খরচ করেন, কেউ ধারকর্জ করেন, কেউ ঘরের মালামাল বন্ধক রেখে, কেউবা মহাজনের কাছ থেকে অগ্রিম দাদন নিয়ে দিনগুলো পার করে দেন। 

 

 

দিন চলে যায় ঠিকই, কিন্তু সংকটের দিনের রেশ থেকে যায় আরও বহুদিন। এসব কারণে মাছ ধরা পেশায়
নিয়োজিত মানুষরা মাথা তুলতে পারেন না। তাদের মেরুদণ্ড আর সোজা হয় না। মহাজনের কাছে এক একটি পরিবার বাঁধা থাকে যুগ যুগ। প্রতি বছর মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময় এলে এসব আলোচনাই ঘুরে ফিরে আসে। আলোচনা হয়, দাবি ওঠে, কর্তৃপক্ষের কাছেও হয়তো পৌঁছায় দাবিগুলো। কিন্তু তাতে সংকটাপন্ন পরিবারগুলোর অবস্থা কতটা বদলায়? 

মার্চ-এপ্রিলের নিষিদ্ধকালে কাজের সন্ধানে বহু জেলে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র যায় বলেও শোনা যায়। মাছ ধরায়
নিষেধাজ্ঞার সময়ে আমার সঙ্গে প্রতি বছরই বহু জেলের কথা হয়। খুব কম সংখ্যক জেলের দেখা পাই, যারা পুনর্বাসন সহায়তা পেয়েছেন। আবার এমন অনেকের সঙ্গে দেখা হয়, যারা জেলে না হয়েও পুনর্বাসনের চাল পান। কেন পান না? এই প্রশ্নের জবাব অনেক দীর্ঘ।

তবে মোটা দাগে এটুকু বোঝা যায়, প্রথমত দুর্নীতির কারণে প্রকৃত জেলেরা পুনর্বাসন সহায়তা পান না। এর সঙ্গে রয়েছে বরাদ্দে অপ্রতুলতা। ৫ হাজার জেলে অধ্যুষিত কোনো এলাকায় ৫০০ জনকে সহায়তা দেওয়া হলে সহায়তা প্রাপ্তদের খুঁজে পাওয়া ততটা সহজ হবে না। প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা কিংবা জনপ্রতিনিধি সকলেই ‘অপ্রতুল বরাদ্দের’ কথা বলেই দায়িত্ব সারেন।

 

 

জাটকা মৌসুমে মাছ ধরা নিষিদ্ধকালীন সময়ে একজন জেলের জন্য পুনর্বাসন সহায়তা হিসেবে দেওয়া হয় ৪০ কেজি চাল। ৪ মাস ধরে তারা এ সহায়তা পান। শুধু চাল দিয়ে ভাত রান্না করে তো তারা খেতে পারেন না। তরকারিসহ অন্যান্য বিষয় যোগ হয়। আড়াইশ থেকে ৩০০ টাকার নিচে কোনো পরিবারের দিন চলে না। সেক্ষেত্রে পুনর্বাসন সহায়তা হিসাবে সীমিত সংখ্যক জেলেকে মাত্র ৪০ কেজি করে চাল দেওয়ার কোনো অর্থ আছে বলে মনে হয় না।

জাটকা ধরা নিষিদ্ধ অভিযানে সরকার সফল। কয়েক বছর ধরে এই অভিযান কঠোর ভাবে পরিচালিত হওয়ায় ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে বলে দাবি মৎস্য বিভাগের। মাঠ পর্যায়ে অভিযান পরিচালনায় কড়াকড়িও আছে। জাটকা নিষিদ্ধ এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের রাত জেগে নদী পাহারার খবর থেকে আমরা তেমনটাই ধারণা করতে পারি। আইন প্রয়োগ হোক, নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরা পুরোপুরি বন্ধ থাকুক, সেটাই সকলের কাম্য। কিন্তু যে পরিবারটি মাছ ধরার ওপরই পুরোপুরি নির্ভরশীল, সে পরিবার নিষিদ্ধ সময়ে কী খেয়ে বাঁচবে- সে বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে হবে।

মার্চ মাস এলে সংবাদপত্রে খবর প্রকাশ হয়- ‘পুনর্বাসন সহায়তা পায়নি জেলেরা’, অথবা ‘পুনর্বাসন সহায়তা বিতরণে অনিয়ম’। আবার পাশাপাশি- ‘জাটকা ইলিশসহ জেলে আটক’‘নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নদীতে জাল ফেলায় জেলে গ্রেপ্তার’ এমন সব খবর।

নিষিদ্ধ সময়ে এসব কোনো খবরই প্রত্যাশিত নয়। সংকটকালে জেলেরা যাতে তিন বেলা ভাত অন্তত খেতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। এর পাশাপাশি জাটকা নিষিদ্ধকালীন জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিতে হবে। দুঃসময়ে জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করলে হয়তো একদিন জেলে পেশাটাই
‘মৌসুমী’ পেশায় পরিণত হবে।

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা নিবার্হী কমকতা (ইউএনও) রাসনা শারমিন মিথি বলেন, 'নিষেধাজ্ঞা সময় খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে বকনা বাছুর, হাঁস, মুরগী, ভেড়া ইত্যাদি দেওয়া হচ্ছে। এবার চলতি বছর (২০২৫) ৩৪ হাজার ৭২৫ জেলে কার্ডের আওতায় ৮৬৮ দশমিক ১২৫ মেট্রিক টন ভিজিএফের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।'

এমএ
সম্পর্কিত   বিষয়:  ভোলা   চরফ্যাশন  


LATEST NEWS
MOST READ
Also read
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000.
Phone: PABX- 41053001-06; Online: 41053014; Advertisement: 41053012.
E-mail: [email protected], news©dailyobserverbd.com, advertisement©dailyobserverbd.com, For Online Edition: mailobserverbd©gmail.com
🔝
close