দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তীব্র চিকিৎসক সংকটে ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা। প্রায় দুই লাখ মানুষের চিকিৎসার ভার এখন মাত্র তিনজন চিকিৎসকের কাঁধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৫০ শয্যার এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেডিকেল অফিসার, কনসালটেন্ট ও সহকারী সার্জনসহ মোট ২৫টি চিকিৎসকের পদ রয়েছে। তবে বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ মাত্র তিনজন চিকিৎসক কর্মরত আছেন। ফলে হাসপাতালের আউটডোর ও ইনডোরে প্রতিদিন রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের।
বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ, হাকিমপুর ও ফুলবাড়ি উপজেলার রোগীদের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। উন্নত যোগাযোগব্যবস্থার কারণে প্রতিদিন বহু রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু চিকিৎসক সংকটের কারণে হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
হাসপাতালে কোনো নারী চিকিৎসক না থাকায় নারীদের গোপন রোগের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। গাইনী ও অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি নার্স, ওয়ার্ড বয় ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কয়েকটি পদ শূন্য থাকায় ভর্তি রোগীরা পর্যাপ্ত সেবা পাচ্ছেন না এবং হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা দ্রুত চিকিৎসক ও জনবল নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন, যাতে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিমুক্তভাবে স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন।
চিকিৎসা নিতে আসা খুরশিদ আলমসহ কয়েকজন রোগি বলেন, সামর্থ্যবানরা প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা করালেও গরীব রোগীদের ভরসাস্থল এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু এখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকায় ৫৬ কিলোমিটার দূরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের রেফার করা হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়ছেন গরীব রোগীরা। আর্থিক সংকটে অনেকে প্রয়োজনীয় রোগের পরীক্ষা ও চিকিৎসা করাতে না পেরে কষ্ট পোহাচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ শাহরিয়ার পারভেজ জানান, চিকিৎসক ও জনবল সংকটে দিনরাত রোগীদের সেবা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিরামপুর উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলার ৫/৬শ’ রোগীকে আউটডোরে এবং ৬০ থেকে ৬৫ জন ভর্তি রোগীকে প্রতিদিন ইনডোরে চিকিৎসা দিতে হয়। মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে রোগীদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। চিকিৎসক ও জনবল সংকটের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও জনবল সংযুক্ত করা হলে রোগিরা ভোগান্তিহীন ভাবে চিকিৎসা সেবা পাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
এনআই/এসআর