সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা থেকে গাছতলা পর্যন্ত প্রধান সড়কটি দ্রুত ও মানসম্মতভাবে পুনর্নির্মাণের দাবিতে সোমবার (২৭ অক্টোবর) ধর্মপাশা হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় শান্তিপূর্ণ সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
‘নাগরিক অধিকার আন্দোলন, ধর্মপাশা, সুনামগঞ্জ’-এর আয়োজনে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলে। এতে হাজারো সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও পরিবহন শ্রমিক অংশ নেন। “আমাদের দাবি একটাই—ধর্মপাশায় রাস্তা চাই”—এই স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
কর্মসূচির সঞ্চালনায় ছিলেন নাজমুল ইসলাম তপু এবং সভাপতিত্ব করেন মুফতি মোল্লা মাহমুদ হাসান। বক্তব্য রাখেন আজহারুল ইসলাম দিপ্ত, সামিউল হক সৌরভ, অনিক মজুমদার, মুফতি মহসিন, মুফতি সাইফুল ইসলাম, মুফতি মুফীদ শাহ ও মুফতি যোবায়ের আলম।
অবরোধ চলাকালীন ধর্মপাশা সার্কেলের এএসপি মো. এস. এম. ফজলে রাব্বি রাজিব ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অবরোধকারীদের কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। তবে আন্দোলনকারীরা বলেন, “দৃশ্যমান পদক্ষেপ ছাড়া কোনোভাবেই অবরোধ প্রত্যাহার করা হবে না।”
উল্লেখ্য, ধর্মপাশা থেকে মধ্যনগর পর্যন্ত সড়কটি সুনামগঞ্জ নয়, পার্শ্ববর্তী জেলা নেত্রকোণা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের আওতাধীন।
অবরোধ চলাকালীন সময়ে নেত্রকোণা সওজের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শামীম হোসেন উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা করেন। তিনি অবরোধকারীদের সঙ্গে মোবাইল ফোনের লাউডস্পিকারের মাধ্যমে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম মিত্রের কথা বলিয়ে দেন।
পার্থ প্রতীম মিত্র বলেন, “এ সড়কের বিষয়ে মিটিংয়ে আমাদের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এখন শুধু ঠিকাদার নিয়োগ বাকি। আমাদের একটু সময় দিন—কাজ অগ্রাধিকারে পাঠানো হয়েছে।”
তবে আন্দোলনকারীরা এ বক্তব্যে সন্তুষ্ট হননি। নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সদস্য আজহারুল ইসলাম দিপ্ত বলেন, “আমরা আর কোনো আশ্বাস চাই না। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইউএনও মহোদয়, প্রধান প্রকৌশলী, এলজিইডি ইঞ্জিনিয়ার ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ওপেন টেবিল বৈঠকে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা চাই। আমরা ‘লাস্ট ফিনিশিং’ চাই—বিগত ১০ বছর ধরে কেবল প্রতিশ্রুতিই শুনছি।”
সামিউল হক সৌরভ বলেন, “আমরা ১২ ফুট প্রশস্ত রাস্তা চাই না; চাই টেকসই ও উন্নত মানের রাস্তা, যাতে ভবিষ্যতে মানুষ ভোগান্তিতে না পড়ে।”
অবরোধকালীন সময়ে যান চলাচল বন্ধ থাকলেও পরিবহন শ্রমিকরা আন্দোলনকারীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।
শেষ মুহূর্তে ‘নাগরিক অধিকার আন্দোলন’ ঘোষণা দেয়—“আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই সড়কের সমস্যার সুরাহা না হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচির ডাক দিতে বাধ্য হব।”
পুরো কর্মসূচি জুড়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে, এবং কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
একে/আরএন