খুলনার পাইকগাছায় তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর পেটে লাথি মারায় তার গর্ভস্থ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় নিন্দা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল ৬টার দিকে উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নের কাকড়াবুনিয়া (জামাইপাড়া) এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
অভিযোগে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার একটি প্রভাবশালী চক্র সরকারি ওয়াপদার রাস্তায় বসবাসরত ভূমিহীন পরিবারগুলোর ওপর দমননীতি চালিয়ে আসছে।
ভুক্তভোগী মোছা. রাজিয়া বেগম (৪৫) পাইকগাছা থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানান, তার মতো প্রায় ৫০টি ভূমিহীন পরিবার ইউনিয়ন পরিষদ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতিতে ওই এলাকায় বসবাস করছে। কিন্তু আসামি ইয়াসিন আরাফাত (২০), নয়ন মোড়ল (২২), তরুণ মুনি (২৩) সহ কয়েকজন ওই জমি দখলের পাঁয়তারা করে আসছে। শনিবার বিকেলে আসামিরা রাজিয়ার বাড়ির সামনে এসে গালিগালাজ শুরু করলে প্রতিবাদ জানায় রাজিয়ার গর্ভবতী পুত্রবধূ শাপলা খাতুন (২৫)। একপর্যায়ে ইয়াসিন আরাফাত তার পেটে লাথি মারে। এতে শাপলা খাতুন গুরুতর আহত হয়ে রক্তক্ষরণে অচেতন হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরিবারের সদস্যরা আহত শাপলাকে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার গর্ভস্থ শিশুর মৃত্যু হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, হামলাকারীরা শাপলার স্বামী শেখ আলী হোসেনকেও মারধর করে আহত করে এবং ঘরে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুর ও ৫০ হাজার টাকা লুট করে নেয়।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
বাদী রাজিয়া বেগম বলেন, আমার পুত্রবধূর গর্ভের সন্তানকে তারা মেরে ফেলেছে। এটা শুধু হামলা নয়— এটা নৃশংস হত্যা। আমি আমার সন্তানের রক্তের বিচার চাই।
পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সঞ্জয় কুমার মন্ডল জানান, ফিজিক্যাল এ্যাসাডে ভর্তি করা হয়েছিলো এবং তাকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আল্ট্রাসনো করার পরে রিপোর্টে গর্ভের বাচ্চা নষ্ট হওয়ায় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পেটে আঘাতের কারণে বাচ্চা নষ্ট হতে পারে।
পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রিয়াদ মাহমুদ বলেন, ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি নিয়মিত মামলা হবে।
এলাকাবাসীর দাবি, হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এমন বর্বরতা করার সাহস না পায়।
এসএমএস/এসআর