Sunday | 12 October 2025 | Reg No- 06
Epaper | English
   
English | Sunday | 12 October 2025 | Epaper
BREAKING: ট্রাইব্যুনালের ১৫ অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তা সেনা হেফাজতে      জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান ২ দিন পেছালো      জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কর্মী সমাবেশে উত্তেজনা, ছত্রভঙ্গ করলো পুলিশ       এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার টাকার মধ্যে হওয়া উচিত: জ্বালানি উপদেষ্টা      দু’একজন উপদেষ্টা ও প্রশাসন একটি দলকে ক্ষমতায় নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে: পরওয়ার      এবারের নির্বাচনে আইনের শাসন কাকে বলে দেখাতে চাই: সিইসি      ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে আর্জেন্টিনার দুর্দান্ত জয়      

শিশু বয়সে স্ত্রী হত্যা মামলার আসামি

কারামুক্তির ১৯ বছর পর গ্রামে ফিরতে চান না কবির

Published : Monday, 25 August, 2025 at 10:48 AM  Count : 278

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বাবুরহাট নলুয়া গ্রামের কবির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। তখন তার বয়স ছিল ১৩ বছর। এ বয়সে বিয়ে করা স্ত্রীকে হত্যার দায়ে তার এ সাজা হয়।

১৯ বছর কারাভোগ শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলার কারাগার থেকে মুক্তি পান। এখন তার বয়স ৩২ বছর। পুলিশ কবির, তার বাবা সালাউদ্দিন, মা ময়ফুল বেগমকে মামলায় জড়ায়। আর এ সুযোগে বাড়িঘর, জমিজমা সবকিছু কেড়ে নেন চাচা আবু তাহের মুন্সি।

ইতোমধ্যে মারা গেছেন বড় ভাই ও বোন। আরেক ভাই মানসিক রোগী, পথে পথে ঘুরে বেড়ান। ৭০ বছর বয়সী বাবা এখন ভিক্ষা করেন। জেল থেকে ছাড়া পেলেও গ্রামে ফিরতে সাহস পাচ্ছেন না কবির। 

ভোলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হক বলেন, এলাকায় ফিরতে কবির যদি পুলিশের সাহায্য চান, তাকে সহযোগিতা করা হবে।

রোববার এ প্রতিবেদকের কাছে করুণ পরিণতির কথা তুলে ধরতে কান্নায় ভেঙে পড়েন কবির। ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য চান।

তিনি বলেন, '২০০৭ সালে কবির শিশু বয়সেই একটি সেলুনে (চুল কাটার দোকান) কাজ করতেন। সে সময় বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের সাত দিনের মাথায় বিকেলে কবির বাজার থেকে বাড়ি ফিরে দেখে স্ত্রী বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে আছে। ওইদিন নানা বাড়িতে ছিলেন বাবা ও মা। এমন পরিস্থিতিতে ছুটে যান ২০ কিলোমিটার দূরের নানা বাড়িতে। থানায় জানালে পুলিশ আসে। সন্দেহভাজন অভিযুক্ত নুরু ও সেলিমকে আটক করে পুলিশ। জমিজমার বিরোধে হুমকি দিতেন চাচা আবু তাহের মুন্সি, তাকেও পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। এ সময় কবিরকেও থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। অভিযুক্তরা পুলিশকে ম্যানেজ করে থানা থেকে বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু কবিরের ওপর সব দোষ চাপানো হয়।'

কবির হোসেন বলেন, 'চাচা আবু তাহের তাকে প্রলোভন দেন- ‘ভয় নাই। তুই বলবি তুই কুলসুমকে মাইরা ফালাইছস। তোরে আমি ছাড়াইয়া নিমু। আমার মেয়ের সঙ্গে ফের বিয়া দিমু, কোনো চিন্তা করিস না। পুলিশ তোরে ছাইড়া দিব।’ আর এতেই কবিরের জীবনে নেমে আসে সাজা ভোগের ১৯ বছর। ফুপাতো ভাই নুরু ও সেলিম কুলসুমকে ধর্ষণের পর হত্যা করে। তাদের বিচার হলো না। ২০০৯ সালের ০৭ এপ্রিল আদালত কবিরকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়। এরপর জেলাখানায় কেটেছে ১৯ বছর।'

তিনি বলেন, 'বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছি। জেলখানা থেকে বের হওয়ার পর বৃদ্ধ বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। কিন্তু নিজ এলাকায় ফিরে যেতে ভয় পাই। কার কাছে যাব। কারাগারে থাকাকালীন গেল ঈদে একজন একটি পাঞ্জাবি ও পাজামা দিয়েছিলেন। সেটি পরেই জেলা শহরে অবস্থান করছি। স্বজনরা যারা ক্ষতি করেছেন, তাদের মাঝে আর থাকতে চাই না।'

স্থানীয় মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি রিন্টু হাওলাদার বলেন, 'ওই সময় নববধূকে হত্যার বিষয়টি চাঞ্চল্যকর ছিল। মামলার খরচ জোগাতেই কবিরের বাবা সালাউদ্দিন সালু জমিজমা বিক্রি করেন। তার চাচার দাবি তিনি ওইসব জমি কিনে নিয়েছেন। অপর দিকে ধর্ষক ও হত্যাকারী হিসাবে কবির যাদের নাম বলছে, নুরু ও সেলিম বর্তমানে চট্টগ্রামে বসবাস করছে।'

জেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ মামুন বলেন, 'চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে আটক এক জেলেকে দেখতে কারাগারে গেলে তখন দেখা পাই কবিরের। ওর মুখে করুণ কথা শুনে হাইকোর্টের একজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলি। পরে ওই বিচারের আপিল করা হয়। অবশেষে সাজার সাড়ে ৭ বছর বাকি থাকতে মুক্তি মেলে কবিরের।'

এমএ
সম্পর্কিত   বিষয়:  ভোলা   চরফ্যাশন  


LATEST NEWS
MOST READ
Also read
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000.
Phone: PABX- 41053001-06; Online: 41053014; Advertisement: 41053012.
E-mail: [email protected], news©dailyobserverbd.com, advertisement©dailyobserverbd.com, For Online Edition: mailobserverbd©gmail.com
🔝
close