মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের মরাজানেরপাড় গ্রামের শমশেরনগর হাসপাতাল সংলগ্ন রঘুনাথপুর ভায়া হাজীনগর সংযোগ সড়কটি দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কার না করায় বেহাল অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা রাস্তার কূল ঘেঁষে গাছ রোপণ ও কাঁচা রাস্তায় গরু-মহিষ চরানোর কারণে রাস্তাটি আরও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। রাস্তাটির সংস্কার ও বাসিন্দাদের রোপিত গাছ অপসারণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট মো. মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯ অক্টোবর প্রায় ৮০ জন স্বাক্ষরিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ইট সলিং ও কাঁচা সড়কটির অলিগলির অনেক স্থানে খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে গ্রামের স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীসহ নাগরিকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগ প্রকট আকার ধারণ করে। রাস্তাগুলোতে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এই রাস্তার দীর্ঘদিন সংস্কার হয়নি। বিষয়টি বারবার কর্তৃপক্ষকে জানালেও টনক নড়ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
সোমবার (২০ অক্টোবর) সরেজমিনে মরাজানেরপাড় গ্রামে গেলে মো. মুজিবুর রহমান বলেন, প্রায় অর্ধ কিলোমিটার সংযোগ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় পড়ে আছে। সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কটি জলাশয়ে পরিণত হয়। এছাড়া রাস্তায় পাশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষা মৌসুমে কাদাময় হয়ে পড়ে। ফলে মানুষের যাতায়াত কঠিন হয়ে পড়ছে। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কর্মজীবী মানুষ সবাই পড়ছেন চরম দুর্ভোগে।
স্থানীয় মইনুল বলেন, বর্ষাকালে গ্রামের কাঁচা রাস্তাগুলো খানাখন্দ, গর্ত ও কর্দমাক্ত হয়ে যায়। একটু বৃষ্টিতেই কাদা হওয়ায় দুর্ভোগ বাড়ে চলাচলকারীদের। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা পড়েন বিড়ম্বনায়। বহুদিন ধরে সড়ক সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল ও রাজু মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই কাঁচা রাস্তা দিয়ে চলাচল করছি। পুরো বর্ষায় কাদামাটি মাড়িয়ে চলাচল করতে কষ্ট হয়। অপরদিকে সড়কের ওপর গরু-মহিষ রেখে ঘাস খাওয়ানো ও রাস্তা দখল করে গাছ রোপণ করে সড়কটি সংকীর্ণ করায় দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। সম্প্রতি আমরা গ্রামবাসীরা নিজ নিজ বাড়ির সামনে আগাছা ও গাছপালা কর্তন ও গর্ত ভরাট করলে স্থানীয় মরহুম কনর মিয়ার বাড়ির সামনে তার ছেলে জমির মিয়া আগাছা না কেটে বাঁশঝাড় লাগিয়ে ও রাস্তায় মহিষ রেখে নষ্ট করছেন। রাস্তার ওপর মহিষ ও বাঁশঝাড় না লাগাতে বলায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তা সংস্কার ও জমির মিয়ার জবরদখল থেকে রাস্তাটি উদ্ধার করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
শমশেরনগর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রাকিব হাসান বলেন, “এলাকার মানুষকে নিয়ে আমি নিজেও বিপাকে আছি। বর্ষায় রাস্তাটি একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। আমরা বারবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি, আশা করছি শিগগিরই এই রাস্তার উন্নয়ন কাজ শুরু হবে।”
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কমলগঞ্জ উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রকিব বলেন, “গ্রামীণ সড়ক উন্নয়নের জন্য আমরা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি। বরাদ্দ পেলে পর্যায়ক্রমে রাস্তা পাকা করা হবে।”
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, “এলাকার জনগণের দুর্ভোগের বিষয়টি আমরা অবগত আছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এসআর