‘কায়দা করে বেঁচে থাকো’-
গ্রাফিতি, দেয়ালে দেয়ালে
দেখেছি অনেক দিন,
মুখস্থও করেছি বিষাদ সময়
পঞ্জিকার পাতা গুনে গুনে।
কোন কোন মাস দীর্ঘ হয় জানি
জ্যৈষ্ঠ হয় আষাঢ় ভাদ্রও হয়
সীমা না ছাড়ায় বত্রিশ;
ফেব্রুয়ারি ছোট হয় জানি সবাই
শেষ ঘণ্টা পড়ার অনেক আগেই
শেষ করেছি মায়ের ভাষা বাঁচানোর সংগ্রাম
তাই ওঁকে বাড়াইনি আর।
মার্চের কালরাত্রি তো পাথর সময়!
বাড়াইনি ডিসেম্বর একাত্তরে
যদিও ছিল আশা নিরাশার দোলাচল
সেটাও শেষ করেছি মধ্যরেখা বরাবর
মহান বিজয় এনে।
এরপর থেকে তিপ্পান্ন বছর চলেছি
দিন তারিখ ধরে ধরে কতো চড়াই উৎরাই
কতো উত্কণ্ঠা আবেগ সংগ্রাম–
নিজের ঔরস-জঠরে জন্ম নেওয়া
স্বৈরাচার হন্তারক কেমনে নামাই
দুই কাঁধ থেকে?
একটু একটু করে বিন্দু বিন্দু
ঘামগুলো স্থাপন করলো
একান্ত গোপন নিবিড় প্রেম
শিখলো বেঁচে থাকার কৌশল
অন্তরে অগ্নিছুরি বড় বেশি
আপনজন।
দুই হাজার চব্বিশে এসে
ছটফট চঞ্চল অস্থির তরুণমন
কোমর বেঁধে সংগ্রাম
বাঁচাব অন্তরের অগ্নি শিখা দেশপ্রেম।
এক দুই তিন করে
ধীরে ধীরে জমায়েত ঘন হয়
আকাশ আরো অন্ধকার হয়
বিভীষিকাময় হয়
বাতাস বহে না নড়ে না
গাছের পাতা
ঘাসের ডগারাও নিশ্চল।
সংগ্রাম চলছে
যেমন চলে এসেছে শত শত বছর
রক্ত ঝরছে অবিরাম
জঘন্য ডাইনী পিশাচের উল্লাস
প্রবল ঘূর্ণিঝড়!
প্রেমের প্রদীপ যাবে কি নিভে!
হারিয়ে যাবো কি আমরা?
আবারো দিন গুনে গুনে
অপেক্ষা করি আরও বেশি
ঝরাই রক্ত ঝরাই জীবন!
মায়েরা ঘর থেকে বের হয়ে আসে
উঠান আঙ্গিনা পার হয়ে
রাজপথে সামিল
সকল ভাই বোন
একজনের পর আরেক জন
সাহসে ভর করে আসে
পূর্ণ করে শূন্যস্থান
সংগ্রামের বৃত্ত বড় হয়
সাথে অপেক্ষার বৃত্ত;
আমরা চাই না–
ক্যালেন্ডারের জুলাই শেষ হোক
আমাদের স্বপ্ন পূরণের আগে,
আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হই ছুড়ে ফেলে দেই
পঞ্জিকার হিসাব নিকাশ।
একত্রিশ কিংবা বত্রিশ নয়
দীর্ঘ হোক যতটা প্রয়োজন
দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী শুধু নয়
দীর্ঘ মাসও বেছে নিলাম আমরা
জুলাইকে দীর্ঘ করে ওঁর কপালে
পরালাম বিজয় তিলক–
সারা বাংলাদেশ ভরে গেল
সুন্দর সৃষ্টি মনের আবেগ ভালোবাসা–
গ্রাফিতি! আহা কী যে সুন্দর!
৩৬শে জুলাই!
এমএ