Monday | 27 October 2025 | Reg No- 06
Epaper | English
   
English | Monday | 27 October 2025 | Epaper
BREAKING: মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি      মতিঝিল থেকে শাহবাগ পর্যন্ত মেট্রো চলাচল শুরু      ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১,১৪৩ জন      মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবার পাবে ৫ লাখ, থাকবে চাকরির সুযোগ      উত্তরা-আগারগাঁও মেট্রো চলাচল শুরু      একজনের সাতটির বেশি সিম নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা      মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ      

খাবারই জুটে ধার-দেনায়, আবার ঈদ উৎসব!

Published : Friday, 6 June, 2025 at 9:30 PM  Count : 239

লালমোহনের বাতিরখাল মৎস্য ঘাটে অলস সময় পার করছেন জেলেরা।

রাত পোহালেই পবিত্র ঈদ-উল-আজহা। এই ঈদকে ঘিরে নানা আয়োজন-উৎসব। তবে ভোলালালমোহন উপজেলার জেলেদের মাঝে নেই কোনো ঈদ আয়োজন বা আনন্দ। বাকি সব দিনের মতোই তারা ঈদের দিনগুলোও কাটিয়ে দেবেন। 

কারণ একদিকে সাগরে নিষেধাজ্ঞা অন্যদিকে নদীতেও আশানুরূপ মাছ নেই। তাই অভাব-অনটনে কোনো রকমে তিন বেলা খেয়ে দিন পার করছেন এই উপজেলার জেলেরা। এই তিন বেলা খেতেও তাদের করতে হচ্ছে ধার-দেনা।

লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের বাতির খাল মৎস্যঘাট এলাকার জেলে মো. মোসলেহ উদ্দিন মাঝি বলেন, 'আমি নদীতে মাছ ধরে সংসার চালাই। গত ২৫ বছর ধরে এ পেশার সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে নদীতে তেমন মাছ নেই। কয়েকদিন আগে তিন দিনের জন্য ১৩ জন জেলেকে নিয়ে নদীতে গিয়েছি মাছ শিকারে। এতে আমাদের খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকার মতো। নদী থেকে তীরে ফিরে মাছ বিক্রি করতে পেরেছি মাত্র ৪ হাজার টাকার। এতে লাভের চেয়েও লোকসান হয়েছে কয়েক গুন। তাই এখন আর নদীতে যাই না, ধার-দেনা করে চলছি। দীর্ঘদিন নদীতে আশানুরূপ মাছ না পেয়ে অন্তত ৬ লাখ টাকা দেনায় জড়িয়েছি।'

তিনি বলেন, 'সংসারে মা, বাবা, স্ত্রী ও দুই ছেলে, এক মেয়ে আছে। আমার যেহেতু মাছ ধরার আয়ে সংসার চলে, সে কারণে আশানুরূপ মাছ না পাওয়ায় এখন দেনা করে কোনো রকমে চলছি। গত বছরও ঈদ-উল-আজহায় কোরবানি দিয়েছি। এবার ধার-দেনায় জর্জরিত থাকায় আর কোরবানি দেওয়া হবে না। সত্যি বলতে; ঈদ সবার জন্য আনন্দের না।'

মোসলেহ উদ্দিন মাঝি বলেন, 'সরকারি ভাবে দুই মাসের চাল সহযোগিতা পেয়েছি, যা অপ্রতুল। ৭০-৮০ কেজি চাল দিয়ে কী আর সংসার চলে? তাই সরকারের কাছে আমার দাবি; এই বরাদ্দ আরও বৃদ্ধি করার এবং আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের।

একই এলাকার ৫৫ বছর বয়সী আরেক জেলে মো. ফারুক মাঝি। তিনি বিগত ৩০ বছর ধরে মাছ শিকার করছেন। এই আয়েই চলছে তার সংসার। ৫ দিন আগে মাছ শিকার করতে ভোরে নদীতে নেমে দুপুরে ফেরেন। এতে তার খরচ হয়েছে ৭ হাজার টাকার মতো। তবে তিনি নদী থেকে ফিরে আড়াই হাজার টাকার মাছ বিক্রি করতে পেরেছেন। এতে লোকসান হয়েছে তারও। তাই এখন আর নদীতে যাচ্ছেন না তিনি।

ফারুক মাঝি বলেন, 'গত বছর ঈদের এমন সময় খুব আনন্দে ছিলাম। কারণ ঈদে কোরবানি দিতে পারবো। তবে এবার আর সেই আনন্দ নেই। কারণ নদীতে মাছ না থাকায় এখন দেনা করে সংসার চালাচ্ছি। এতোই ঋণগ্রস্ত হয়েছি, এখন দোকানদাররাও কোনো সদাই বাকি দিতে চান না। তাই আমাদের মতো যেসব জেলে আছেন, তাদের এই সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য সরকার যেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

লালমোহন উপজেলা মৎস্য দফতরের তথ্যমতে, এই উপজেলায় নিবন্ধিত জেলে আছেন ২৪ হাজার ৮৪০ জন। তবে প্রকৃত জেলে আরও বেশি। এসব জেলেরা উপজেলার অন্তত ২৭টি মৎস্য ঘাট দিয়ে নদীতে মাছ শিকারের জন্য যান। তবে দীর্ঘদিন ধরেই নদীতে তেমন মাছ নেই। আর সাগরেও চলছে নিষেধাজ্ঞা।

এ বিষয়ে উপজেলা সামুদ্রিক মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান বলেন, 'জলবায়ু পরিবর্তন, নদীর নাব্যতা সংকট, অসংখ্য ডুবোচর সৃষ্টি, নদী দূষণ এবং অবৈধ জাল দিয়ে মাছ শিকারের কারণে জেলেরা কাঙ্খিত মাছ পাচ্ছেন না। তবে আশা করছি ঈদের পর পরই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়লে নদীতে মাছ বাড়বে। তখন জেলেরা আরও ভালো পরিমাণে মাছ পাবেন।'

তিনি বলেন, 'জেলেদের মানবিক কর্মসূচির আওতায় ভিজিএফের চাল শত ভাগ জেলে পরিবারকে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো। একইসঙ্গে জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে আরও কিছু প্রকল্প গ্রহণের জন্য মৎস্য অধিদপ্তরের কাছে আমরা চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানাবো।'

এইচপি/এমএ
সম্পর্কিত   বিষয়:  ভোলা   লালমোহন  


LATEST NEWS
MOST READ
Also read
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000.
Phone: PABX- 41053001-06; Online: 41053014; Advertisement: 41053012.
E-mail: [email protected], news©dailyobserverbd.com, advertisement©dailyobserverbd.com, For Online Edition: mailobserverbd©gmail.com
🔝
close