খাগড়াছড়ির রামগড় পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম ভুইয়া ফরহাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১৪ মাসে নতুন করে আরও ৯টি মামলা হয়েছে।
রবিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ফরহাদ অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর ওয়াদুদ ভূঁইয়া তাঁকে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে অসাংগঠনিকভাবে কোণঠাসা করতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ব্যবহার করে এসব মামলা করিয়েছেন।
তিনি বলেন, “২০১৯ সালে কাউন্সিলের মাধ্যমে রামগড় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর আমার নাম বাদ দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যের নাম বসিয়ে একই কমিটি আবার ঘোষণা করা হয়।”
ফরহাদ জানান, বিষয়টি তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের কাছে অভিযোগ করলেও কোনো প্রতিকার পাননি। পরে ওয়াদুদ ভূঁইয়ার একক সিদ্ধান্তে তাঁকে জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক-১ পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, ওয়াদুদ ভূঁইয়া তাঁর আপন চাচা। ২০২৩ সালে পারিবারিক সম্পত্তি বিরোধের জেরে ফেনীর ছাগলনাইয়ায় তাঁর ওপর আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের দিয়ে হামলা চালানো হয়। ওই ঘটনার সাক্ষাৎকারের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জেলা বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ নিপু তাঁর বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করেন।
ফরহাদ দাবি করেন, ওই মামলার তথ্য রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কিছু কর্মকর্তা ব্যবহার করে তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালান। ২০২৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রাতে বিশেষ গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্য ও ওয়াদুদ ভূঁইয়ার অনুসারীরা একযোগে তাঁর চট্টগ্রামের বাসা ও স্বজনদের বাড়িতে অভিযান চালান। তাঁকে না পেয়ে তাঁর স্কুলপড়ুয়া দুই ছেলেকে অপহরণের পরিকল্পনাও করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ওয়াদুদ ভূঁইয়া তাঁকে বিএনপি থেকে সরাতে ২০২৪ সালের “অবৈধ নির্বাচন”-এ তৃণমূল বিএনপি বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়ার প্রলোভন দেন। তাঁকে না পেয়ে তাঁর স্ত্রীর ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়, ফলে তিনি সন্তান নিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
“চৌদ্দ মাস ধরে আমি মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার। আমাকে রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় করার জন্য এসব কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে,” বলেন ফরহাদ।
বিএনপির মনোনয়ন প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দল মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র নিচ্ছে, কিন্তু আমার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি। আমি একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে সিনিয়র নেতাদের সামনে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ চাই।”
সংবাদ সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, “আমাকে দলের সিনিয়র নেতাদের সামনে নিজের বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ দিন।”
ডব্লিউকে/ এসআর