পটুয়াখালীর বাউফলে এক সঙ্গে ৫ সন্তানের জন্ম দেওয়া মা-বাবা নিদারুন অর্থ কষ্টে দিনযাপণ করছেন। টাকার অভাবে নবজাতক সন্তানদের সঠিক যত্ন নেওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন ৫ সন্তানের বাবা মা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ৬ অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে বরিশাল শহরের ডায়াবেটিক হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে একসঙ্গে ৫ সন্তানের জন্ম দেন লামিয়া নামের এক গৃহবধূ। লামিয়া উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়নের সিংহেরাকাঠী গ্রামের সোহেল হাওলাদারের স্ত্রী। স্থানীয় বাহেরচর বাজারে সোহেল হাওলাদারের ছোট্ট একটি মুদি দোকান রয়েছে। এই মুদি দোকানের আয় দিয়েই চলে তার সংসার। এক সঙ্গে ৫টি সন্তান পেয়ে অনেক খুশি সোহেল ও তার স্ত্রী লামিয়া। কিন্তু এই নবজাতকদের খরচ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
সোহেল হাওলাদার বলেন, দুধ ও ন্যাপকিন ক্রয় করতে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। এছাড়াও বাচ্চারা অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়। প্রতিদিন এত টাকা খরচ করার সামর্থ আমার নেই। এক সঙ্গে ৫ সন্তানের জন্ম দিয়ে শাররীকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন স্ত্রী লামিয়া। তাকেও এই মুহুর্তে বেশী বেশী পুষ্টিকর খাবার দেওয়া প্রয়োজন। আমার এখন যা আয় হয় তা দিয়ে এই নিস্পাপ শিশুদের লালন পালন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, সন্তান প্রসবের সময় বরিশাল হাসপাতালে ৯ দিন থাকতে হয়েছে। এখন পর্যন্ত ধার দেনা করে ও একটি এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ প্রায় ২ লাখ টাকা। সবকিছু সামলাতে গিয়ে আমি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।
সোহেল হাওলাদারের শ্বাশুড়ি শাহনাজ বেগম বলেন, আমার ৫ নাতির নাম রেখেছি হাসান, হোসাইন, মোয়াজ্জেম, লাবিবা ও উমামা। সিজার অপারেশন ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে এরা জন্ম নেওয়ার পর অনেকে দেখতে এসেছেন। কেউ কেউ সাহায্যের কথা বলেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেননি। মা মেয়ে মিলে ৫ সন্তানের সেবা শুশ্রষা করে যাচ্ছি। একটানা লালন পালন করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে দুজনেই আবার অসুস্থ হয়ে যাই।
তিনি বলেন, সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে সাহায্যের হাত বাড়ালে এই নিস্পাপ মুখগুলো স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠবে।
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুর রউফ বলেন, নবজাতকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে আর্থিক সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এএস/এসআর