নাটোরের গুরুদাসপুরে বিএনপির উপজেলা ও পৌর ইউনিটের মতবিনিময় সভায় দলীয় দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষ চলাকালে শটগানের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুফি মো. আবু সাঈদ (৫২) এবং কর্মী আফতাব হোসেন (৩৫)। তাঁদের গুরুদাসপুরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (১০ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার চাঁচকৈড় শিক্ষা সংঘ মাঠে এ ঘটনা ঘটে। সভায় উত্তেজনা চরমে পৌঁছালে হঠাৎ গুলিবর্ষণ শুরু হয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, দলকে সংগঠিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় বিএনপির আয়োজনে ওই মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখছিলেন জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ। বক্তব্যের এক পর্যায়ে জেলা বিএনপির সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামালপন্থী নেতা নাজমুল করিম নজু প্রতিবাদ জানালে সভায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় হাতাহাতি, যা দ্রুত সংঘর্ষে রূপ নেয়। সংঘর্ষের সময় গুলিও ছোড়া হয়।
পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান বাবলু অভিযোগ করে বলেন, “পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছে। পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দুলাল সরকার এই হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন।”
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে দুলাল সরকার বলেন, “জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ তার বক্তব্যে কিছু নেতার নাম উচ্চারণ করেন। এতে আপত্তি জানালে আমাদের লোকজনের ওপর উল্টো হামলা চালানো হয়। গুলি ছোড়ার অভিযোগ সঠিক নয়।”
জেলা বিএনপির সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, “আমার সমর্থকদের ওপর পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। তবে আমার কোনো কর্মী গুলিবর্ষণে জড়িত ছিল না।”
অন্যদিকে, আব্দুল আজিজ জানান, “বক্তব্য চলাকালে নাজমুল করিম নজু উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। পরে তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। এরপর কী ঘটেছে, আমি বলতে পারছি না, কারণ আমি সভাস্থলে ছিলাম। বাইরে কী হয়েছে, তা আমার জানা নেই।”
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসমাউল হক বলেন, “সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গিয়ে দুই রাউন্ড শটগানের খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে সেনা সদস্যরাও মাঠে রয়েছে। পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে।”
স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল ক্রমেই প্রকাশ্যে রূপ নিচ্ছে, যা দলীয় ঐক্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।
এমএ/আরএন