চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে কোটি টাকার সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নিচের স্তরে নিম্নমানের ইট বিছিয়ে তার ওপর তুলনামূলক ভালো ইট বসানো হচ্ছে, পরে সেই অংশে বালি ছিটিয়ে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে।
এলাকাবাসীর ভাষায়, “এ যেন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা।” দীর্ঘদিন ধীরগতিতে চলা এই সড়ক নির্মাণকাজ হঠাৎ করেই দ্রুতগতিতে এগোতে শুরু করেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, অনিয়ম ঢাকতেই এ ধরনের তাড়াহুড়ো করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)-এর আইআরআইডিপি-৩ প্রকল্পের আওতায় ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সেকদি–চান্দ্রা সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০২৪–২৫ অর্থবছরে ৮২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। ঠিকাদারি কাজ পেয়েছে এমজেএআইজেবি নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
প্রথমে মাটি ভরাট ও পাইলিংয়ের কাজ শেষ করার পর সম্প্রতি এইচবিবি (HBB) কাজ শুরু হয়। কিন্তু এতে নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগ উঠে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রমিকরা দ্রুতগতিতে ইট বসাচ্ছেন—নিচে খারাপ ইট, ওপরের স্তরে কিছুটা ভালো ইট এবং তার ওপর বালির প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে।
গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা নিম্নমানের ইট ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করেন এবং শ্রমিকদের দিয়ে ইট তুলে ফেলার নির্দেশ দেন।
এলাকাবাসীর পক্ষে মিজানুর রহমান, আব্দুল ওয়াদুদ ও ইব্রাহীম মিয়া বলেন, “এই সড়কের কাজ শুরু থেকেই ধীরগতিতে চলছিল। এখন আবার খারাপ ইট দিয়ে তড়িঘড়ি কাজ করছে। এই ইট বেশিদিন টিকবে না—কয়েক মাসের মধ্যেই ভেঙে পড়বে।”
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তদারক কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান ভুট্টো ও শাকিল আহমেদ বলেন, “কিছু নিম্নমানের ইট ভুলবশত আসায় ব্যবহৃত হয়েছে, সেগুলো সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। ভালো ইট দিয়েই কাজ সম্পন্ন করা হবে।”
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবরার আহম্মদ বলেন, “নিম্নমানের ইট ব্যবহারের বিষয়টি আমাদের জানা আছে। ঠিকাদারকে তাৎক্ষণিকভাবে খারাপ ইট সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। আমি নিজেও সরেজমিনে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
এমআই/আরএন