মুন্সীগঞ্জ শহরে অস্ত্র, গুলি, বোমা বানানোর সরঞ্জাম ও নগদ টাকাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহরের মানিকপুর এলাকার একটি পাঁচতলা ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বাড়ির মালিক আব্দুল হালিম মীর (৬০), তার ছেলে শফিকুল মীর (৩৮) ও আব্দুল হাই মীরের ছেলে সোহেল মীরকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জব্দকৃত মালামালের মধ্যে রয়েছে একটি পাইপগান, ১০০ রাউন্ড গুলি, বোমা বানানোর বিভিন্ন সরঞ্জাম, একটি চাইনিজ কুড়াল, একটি ছোড়া, একটি চাপাতি, পাঁচটি হেলমেট, একটি বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও নগদ তিন লাখ টাকা।
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো. ফিরোজ কবির জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিকেলে শহরের মানিকপুর গ্রামে আব্দুল হালিম মীরের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। তার নেতৃত্বে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল অভিযানকালে বাড়ির মালিকসহ ৩ জনকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের হেফাজত থেকে একটি পাইপগান, ১০০ রাউন্ড গুলি, বোমা বানানোর বিভিন্ন সরঞ্জাম, একটি চাইনিজ কুড়াল, একটি ছোড়া, একটি চাপাতি, পাঁচটি হেলমেট, একটি বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও নগদ তিন লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
ধারণা করা হচ্ছে, মুন্সীগঞ্জ সদরের চরাঞ্চলের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে এসব ব্যবহার করা হয়। জব্দকৃত আগ্নেয়াস্ত্র আব্দুল হালিম মীর গংয়ের। শহরে মজুদ রেখে তারা চরাঞ্চলে অরাজকতায় এসব আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে থাকে।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে পরবর্তীতে বিস্তারিত জানা যাবে বলে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান।
আটককৃতদের গ্রামের বাড়ি চরাঞ্চলের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের চরডুমুরিয়া এলাকায়। মোল্লাকান্দি ইউনিয়নে দীর্ঘ বছর ধরে বোমা তৈরি এবং বিপণন হয়ে আসছে। বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে এসব বোমা ব্যবহার করা হয়।
গত বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ নেতা রিপন পাটোয়ারি বালতি বোঝাই করে শহরে ককটেল-বোমা সরবরাহ করেন এবং সে বোমা ছাত্র-জনতার ওপর নিক্ষেপ করা হয়। আওয়ামী লীগের চিহ্নিতরা পলাতক থাকলেও হাজারও কর্মী এলাকায় রয়েছেন। তারা বিভিন্ন দলের সাথে মিশে রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
শহরের মানিকপুর গ্রামও গড়ে উঠেছে চরাঞ্চলের জনগোষ্ঠী নিয়ে। মানিকপুর গ্রামে চরাঞ্চলের শতকরা ৯৫ ভাগ মানুষের বসতি। তারা গ্রামে অপরাধ কর্মকাণ্ড করে শহরে বসে তার নেতৃত্ব দেন, এমন অভিযোগ রয়েছে।
আওয়ামী লীগ পতনের পর মোল্লাকান্দিতে বিএনপির দুই গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে বোমাবাজি চলছে। দুই গ্রুপের সাথেই রয়েছে আওয়ামী লীগ।
এদিকে, চরাঞ্চলের মোল্লাকান্দিতে অহরহ ঘটছে অরাজকতা। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে তারা বোমা-ককটেল ব্যবহার করছেন। বালতি ভর্তি ককটেলও উদ্ধার করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এমএইচএস/এসআর