পটুয়াখালীর বাউফলে আগাম জাতের তরমুজের ফলন হওয়ায় কৃষকদের মাঝে খুশির আমেজ বিরাজ করছে। আসন্ন রমজানে রসালো তরমুজের বাজার ধরার অপেক্ষা করছেন তারা। আগেভাগেই তরমুজ বাজারজাত করে অধিক লাভের আশা নিয়ে গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের চরফেডারেশন, চর শৌলা, চর কালাইয়া, চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চরব্যারেট, চর রায়সাহেব, চর মিয়াজান, দিয়ারা কচুয়া, ধুলিয়া ইউনিয়নের চর বাসুদেবপাশা ও কেশবপুর ইউনিয়নের মমিনপুর সহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তরমুজ চাষাবাদ হয়। এসব এলাকায় নদী ও খালের পানিতে লবনাক্ততা নেই। যার কারণে সেচের পানিতে তরমুজ গাছের কোনো সমস্যা হয় না। ফলনও ভালো হয়। যে কারণে দিন দিন বাউফলের চরাঞ্চলে তরমুজ চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।
চরব্যারেট এলাকায় চলতি মৌসুমে ১২ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন চাষী মো. সেলিম ব্যাপারী (৪২)। যার মধ্যে ৭ একর জমিতে তিনি আগাম জাতের তরমুজ করেছেন। ইতিমধ্যে ফলও এসেছে। অধিকলাভের আশায় রমজানে শুরুর বাজার ধরতে ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি।
চাষী সেলিম জানান, ইফতারের জন্য তরমুজের চাহিদা বেশি থাকে। রজমানের প্রথম দিকে বাজারে ফল কম থাকায় তরমুজের দাম ভালো পাওয়া যায়। রমজানের বাজারকে টার্গেট করেই তিনি আগাম জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। এখন শুধু অপেক্ষা, আগাম তরমুজ বিক্রি করে তার রঙিন স্বপ্ন পূরণ করবেন।
আরেক চাষী মো. অলিউর রহমান (৩৮) বলেন, তিনি চরকালাইয়া এলাকায় ৭ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। যার মধ্যে ৪ একর আগাম জাতের। তার গাছেও ফল এসেছে। তিনিও রমজানের প্রথম দিকের বাজারে ফল তুলবেন বলে আশাবাদী।
চাষী অলি বলেন, তরমুজ চাষে খরচ বেশি। তবে ভালো ফলন ও বাজারে চাহিদা থাকলে লাভও বেশি হয়। আবহাওয়া খারাপ হলে লোকসান হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি বছর বাউফল উপজেলায় ৪২৫৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে ১২৫০ হেক্টর জমিতে আগাম তরমুজের আবাদ হয়েছে। সাধারণত আমন ধান ঘরে তোলার পর জানুয়ারি মাস থেকে তরমুজের আবাদ শুরু হয়। ফলন আসে এপ্রিলে। তবে ডিসেম্বর মাসেই আগাম তরমুজের আবাদ শুরু হয়। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে তরমুজ বিক্রি শুরু হয়।
বাউফল উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আনসার উদ্দিন বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর ৯৪০ হেক্টর জমিতে বেশি তরমুজের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি। আগাম জাতের তরমুজের ফলনও ভালো হয়েছে। রমজান সামনে থাকায় ভালো দামও পাবেন চাষীরা। আশা করছি প্রতি হেক্টরে ২৫ থেকে ৩০ টন ফলন পাওয়া যাবে।
এসআর