অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা সহ্য করে ছেলে ইস্রাফিল হোসেনকে মানুষ করেছেন কৃষক হুমায়ুন কবির। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পুলিশের কনস্টেবল পদে চূড়ান্তভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের তালিকায় ছেলের নাম দেখে আনন্দে আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। চোখের জলে আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এই কৃষক।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে হুমায়ুন কবির বলেন, “অনেক কষ্ট করে ছেলেকে মানুষ করেছি। আজ সে দেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ পেয়েছে। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। আমার ছেলে যাতে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে মানুষের সেবা করতে পারে, সেই দোয়া করছি।”
ইস্রাফিল হোসেন বলেন, “আমি এর আগে পুলিশের কনস্টেবল পদে দুইবার ভাইভা দিয়েও বাদ পড়েছি। তবে হতাশ হইনি। বাবা আমাকে সবসময় সাহস দিয়েছেন। অবশেষে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে এবার চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ, বিনা টাকায়—শুধু ১২০ টাকা আবেদন ফি দিয়ে চাকরি পেয়েছি। কোনো সুপারিশ বা ঘুষের প্রয়োজন হয়নি।”
ইস্রাফিলের মতো আরও ২৩ জন প্রার্থী নানা প্রতিকূলতা জয় করে পুলিশে নিয়োগ পেয়েছেন। ফলাফল ঘোষণার পর লক্ষ্মীপুর পুলিশ লাইন্স এলাকায় কান্না ও আনন্দে আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষায় মোট ৯১০ জন প্রার্থী ১২০ টাকা ফি দিয়ে অনলাইনে আবেদন করেন। এর মধ্যে মাঠ পরীক্ষায় অংশ নেন ৬৭৪ জন। মাঠ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ২২২ জন। পরে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪৭ জন উত্তীর্ণ হন। সর্বশেষ ধাপ শেষে ২৪ জনকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মো. আকতার হোসেন বলেন, “জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের যে গতি ছিল, সেই গতি ধরে রেখে আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। নিয়োগটি হয়েছে সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে। আবেদনকারীরা মাত্র ১২০ টাকা ফি দিয়েছে। অতিরিক্ত কোনো অর্থ দিতে হয়নি। যারা উত্তীর্ণ হয়েছেন, তারা যোগ্যতার মাধ্যমেই চাকরি পেয়েছেন।”
আরএইচআর/এসআর