সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলায় ১৪৪টি গ্রামের প্রায় দেড় লাখ মানুষ চিকিৎসা সেবার ঘাটতির কারণে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। এ উপজেলায় এখন পর্যন্ত নেই একজনও সরকারি এমবিবিএস চিকিৎসক।
১৯৭৪ সালে গঠিত মধ্যনগর থানা ২০২১ সালে উপজেলায় উন্নীত হলেও এখন পর্যন্ত স্থাপন হয়নি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ফলে স্থানীয়দের সাধারণ রোগের চিকিৎসার জন্য যেতে হয় পার্শ্ববর্তী ধর্মপাশা বা নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। আর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে যেতে হয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
পাহাড়-জঙ্গল ঘেরা প্রত্যন্ত গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের ধর্মপাশা হাসপাতালে পৌঁছাতে হয় প্রায় ৩৫-৪০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে, আর কলমাকান্দার দূরত্ব গড়ে ২২-২৫ কিলোমিটার। বর্ষায় নদীপথ, আর শুকনায় কাঁচা রাস্তা—এই ভঙ্গুর যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনেক সময় হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই রোগীর মৃত্যু হয়।
উপজেলায় দুইটি ১০ শয্যার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র থাকলেও চিকিৎসক সংকটে সেবার মান প্রায় শূন্যের কোঠায়। দাতিয়াপাড়া কেন্দ্রটিতে মাত্র ৩ জন সরকারি কর্মী এবং ২ জন এনজিও নিয়োজিত মিডওয়াইফ কাজ করছেন। অন্যদিকে, মধ্যনগর কেন্দ্রও চলছে সীমিত জনবলে—২ জন মিডওয়াইফ ও ১ জন আয়া। ফলে এসব স্থাপনাও কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা এবিএম জুয়েল তালুকদার বলেন, "আমরা রোগে-শোকে ফার্মেসির উপর নির্ভরশীল। আর মুমূর্ষু রোগী হলে কলমাকান্দা যেতে হয়, অনেক সময় পথে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।"
মধ্যনগরে পূর্বে ২০ শয্যার একটি হাসপাতালের অনুমোদন ছিল, তবে অবকাঠামো না থাকায় সেখানে কর্মরত দুই এমবিবিএস চিকিৎসকের একজনকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ও অন্যজনকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানান ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সুবীর সরকার।
সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. জসিম উদ্দিন জানান, মধ্যনগরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থাপনের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে জানান তিনি। কবে এটি বাস্তবায়ন হবে, সে বিষয়েও নির্দিষ্ট কিছু জানাতে পারেননি।
আরএ/এসআর