গাইবান্ধা জেলার অধিকাংশ পরিবার কৃষি ফসল উৎপাদন করেই মৌলিক চাহিদা পূরণের চেষ্টা করেন। অন্যান্য ফসলের চেয়ে সবচেয়ে লাভজনক হচ্ছে- আমন ধানের আবাদ। চলতি মৌসুমে এই আবাদে সার-কীটনাশক প্রয়োগ শেষে দেখা দিয়েছিল বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা। এরই মধ্যে কারেন্ট পোকার আক্রমণ আর হেমন্তের বৃষ্টিতে ধানখেত নুয়ে পড়ে মিশে যাচ্ছে পানিতে। এতে অপূরণীয় ক্ষতির শঙ্কায় ভুগছেন কৃষকরা।
শনিবার (১ নভেম্বর) সরেজমিনে গাইবান্ধা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার মাঠপর্যায়ে ঘুরে দেখা গেছে, রোপ আমন ধানের ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। যেখানে ধানের শীষ পরিপক্ক হওয়ার কথা, সে মুহূর্তে পোকার আক্রমণসহ বৃষ্টির পানিতে নুয়ে পড়া ধানগাছ কেটে দেওয়া হচ্ছে গবাদীপশুর মুখে।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে হেলেপড়া থোড়ধান, আধাপাকা ধানগাছগুলো কেটে গরুকে দেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ তা আঁটি বেঁধে বিক্রি করছেন হাট-বাচারে। এই দুর্যোগে কি পরিমাণ ধানের ক্ষতি হয়েছে সেটি জানাতে পারেনি কৃষি বিভাগ। তবে কৃষকরা ধারণা করছে- পোকা আর বৃষ্টিতে এ জেলায় প্রায় হাজার হেক্টর জমির ধান নষ্ট হওয়ার পথে।
স্থানীয় কৃষক জহুরুল ইসলাম জানান, এ বছর তিনি দুইবিঘা জমিতে রোপা আমন চাষাবাদ করেছেন। ইতোমধ্যে এই খেতে থোড় থেকে ধানের শীষ বেড় হয়। এরই মধ্যে বৃষ্টি-বাতাসে তার ২৫ শতক খেতের ধানগাছ হেলে পড়েছে পানির ওপরে। এতে প্রায় ১০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে এই কৃষকের।
আরেক কৃষক জহির উদ্দিন বলেন, শুধু বৃষ্টির পানি নয়, এর আগে কারেন্ট পোকার আক্রমণে আমার ২৫ শতক আমন ধান খেত নষ্ট হয়েছে। এ নিয়ে চরম হতাশায় ভুগছি।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পোকা দমনের জন্য ইতোমধ্যে কৃষকের মাঝে লিফলেট বিতরণসহ উঠান বৈঠক করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষকের নুয়ে পড়া ধানগাছগুলো লজিং আপ (দাড়) করোনোর পরমর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে করে কৃষকের তেমন ক্ষতি হবে না বলে জানান এ কর্মকর্তা।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, চলতি মৌসুমে এ জেলায় ১ লাখ ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে। সম্প্রতি বৈরি আবহাওয়ার কারণে যেসব খেতের ধান হেলে পড়েছে সেগুলো যাতে ক্ষতি না হয় তা নিয়ে উপসহকারীরা মাঠপর্যায়ে কাজ করছে।
টিএইচজে/ এসআর