বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ (বীরবিক্রম) বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের জন্য জুলাই সনদের প্রয়োজন থাকতে পারে, কিন্তু দেশের সাধারণ জনগণের জন্য তা প্রয়োজনীয় নয়।
শনিবার (১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের আয়োজিত ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “জুলাই সনদ নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। একজন ক্ষুদ্র রাজনৈতিক নেতা ও কর্মী হিসেবে আমার ধারণা, দেশের জনগণের জন্য জুলাই সনদ প্রয়োজন নেই। তবে কিছু ব্যক্তির জন্য যারা উপদেষ্টা পদে রয়েছেন এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশে বসবাস করতে গেলে নানা পর্যায়ের মুখোমুখি হবেন, তাদের জন্য হয়তো এটি প্রয়োজন।”
হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশের প্রয়োজন একটি নির্বাচন। যেখানে জনগণ প্রতিনিধিদের নির্বাচিত করতে পারবে। আমরা আশা করব, আগামীতে একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হবে। এই নির্বাচনে যারা বিজয়ী হবেন, জনগণের প্রতিনিধি হবেন তারাই জুলাই সনদকে সমর্থন করবেন। আমার দল বিএনপি জুলাই সনদকে সমর্থন করে, আমরাও এটি সমর্থন করতে বাধ্য। কিন্তু এটার মধ্যে এমন জিনিস ঢুকাবেন না, যেটি নিয়ে আগে ঐকমত্য কমিশনের মিটিংয়ে আলোচনা হয়নি।
তিনি বলেন, এই ধরনের সনদের আমাদের প্রয়োজন নেই। আমাদের প্রয়োজন– একটা পার্লামেন্ট। যে পার্লামেন্টে আগামী দিনের ভাগ্য নির্ধারণ করবে। যেই পার্লামেন্ট এই সনদকে বাস্তবায়িত করবে এবং আগামী গণতন্ত্রকে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত করতে সক্ষম হবে।
দেশের জনগণ পিআর চিনে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, পিআর নিয়ে কথা হচ্ছে। দেশের জনগণকে জিজ্ঞেস করেন, কেউ পিআর চিনেও না। পিআর কেউ চায়ও না। আমরা শত বছর ধরে একজন ব্যক্তিকে নির্বাচিত করে আসছি। তারা ব্যক্তির কাছ থেকে, ভোটারের কাছ থেকে ক্ষমতা তুলে নিয়ে একটা রাজনৈতিক দলের কাছে সমর্পণ করতে চায়। তাহলে জনগণ এমনই ক্ষমতাহীন, তাদেরকে আরো ক্ষমতাহীন করতে হচ্ছে। সুতরাং আমরা চাই বর্তমান যে ব্যবস্থায় নির্বাচন হচ্ছে, সেই ব্যবস্থার মাধ্যমে যাতে নির্বাচন হয়।
মেজর হাফিজ বলেন, আমাদের একটা প্রতিবেশী রাষ্ট্র আছে, যারা চায় না বাংলাদেশ স্বনির্ভর হোক। নিজের স্বাধীনতা সর্বভৌমত্ব অক্ষত থাকুক, এটা তারা চায় না। তারা আশ্রয় দিয়েছে মাফিয়া শেখ হাসিনাকে। শেখ হাসিনা বসে বসে সেখানে কীভাবে বাংলাদেশে নাশকতা করা যায়, সে সম্পর্কে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছেন। কলকাতায় তারা অফিস খুলেছেন। আমি তাদেরকে একটা পরামর্শ দেব। শুধু কলকাতা নয়, ভারতের প্রত্যেকটা প্রদেশে আপনারা একটা করে অফিস খুলেন। ভারতের কাছ থেকে সনদ নেন। তারপরে ভারতের রাজনীতিতে আপনারা মিশে যান। বাংলাদেশে আপনাদের কোনো প্রয়োজন নেই।
সবশেষে একটি কথা হলো আমরা ঐক্যবদ্ধের সংগ্রাম করে এই মাফিয়া সরকারকে হটিয়েছি।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন– বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, এড. সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।
এসআর
