নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের মাধ্যমে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে মূলপর্বের টিকিট নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। আগেই এশিয়া কাপ নিশ্চিত হলেও আজ তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচেও জয়ে ধরে রাখল লাল-সবুজের মেয়েরা। ইয়াঙ্গুনে অনুষ্ঠিত ম্যাচে প্রথমার্ধেই ৭-০ গোলের বড় ব্যবধানে এগিয়ে গিয়ে শেষ পর্যন্ত একই ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে পিটার বাটলারের শিষ্যরা।
এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে মোট আটটি গ্রুপে ভাগ হয়ে লড়েছে দলগুলো। প্রত্যেক গ্রুপের চ্যাম্পিয়নরাই সুযোগ পাচ্ছে আগামী বছর অনুষ্ঠিতব্য মূলপর্বে। বাংলাদেশ ছিল ‘সি’ গ্রুপে এবং তিন ম্যাচেই জয় তুলে নিয়ে পূর্ণ ৯ পয়েন্টে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এই তিন ম্যাচে বাংলাদেশের গোলসংখ্যা ১৬, বিপরীতে কেবল একবারই গোল হজম করেছে দলটি—মিয়ানমারের বিপক্ষে।
গত দুই আসরের এশিয়ান কাপ বাছাই ছিল বাংলাদেশের জন্য হতাশাজনক। কোনো ম্যাচেই জয় পায়নি, বরং হজম করতে হয়েছিল একের পর এক গোল। কিন্তু এবার পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। টানা দুইবার সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়া নারী দলটি এবার এশিয়ান পর্যায়ে নিজেদের শক্ত অবস্থান জানান দিয়েছে, বিশেষ করে শক্তিশালী এবং নিয়মিত এশিয়া কাপে খেলা স্বাগতিক মিয়ানমারকে হারিয়ে।
আজকের ম্যাচে বাংলাদেশ প্রথমার্ধেই গোল বন্যায় ভাসিয়ে দেয় তুর্কমেনিস্তানকে। ম্যাচের ৩ মিনিটেই গোল করে স্বপ্না রানী লিড এনে দেন। এরপর শামসুন্নাহার ৬ ও ১৩ মিনিটে জোড়া গোল করেন। টানা আক্রমণের ফলে ১৬ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে আরও তিনটি গোল আসে—মনিকা (১৬’), ঋতুপর্ণা (১৭’) ও তহুরা খাতুন (২০’) গোল করেন। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার তিন মিনিট আগে ঋতুপর্ণা আরও একটি গোল করে দলের লিড ৭-০তে নিয়ে যান। দ্বিতীয়ার্ধে আর কোনো গোল না হলে এই স্কোরলাইনেই শেষ হয় ম্যাচ।
প্রথম ম্যাচে বাহরাইনকে ৭-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ, সেখানে প্রথমার্ধে ৫ গোল দিয়েছিল দলটি। আর আজ তৃতীয় ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে প্রথমার্ধেই দিয়েছে ৭ গোল। উল্লেখযোগ্যভাবে, তুর্কমেনিস্তান তাদের প্রথম ম্যাচেই স্বাগতিক মিয়ানমারের বিপক্ষে ৮ গোল হজম করেছিল।
বিজয়ের রথে চড়ে থাকা বাংলাদেশ নারী দল আগামীকাল বিকেলে মিয়ানমার থেকে রওনা হয়ে মধ্যরাতে দেশে ফিরবে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) রাতেই এই কৃতিত্বপূর্ণ সাফল্যের জন্য নারী ফুটবলারদের সম্মাননা জানানোর পরিকল্পনা করেছে।
এই জয়ে বাংলাদেশের নারী ফুটবল ইতিহাসে যোগ হলো আরেকটি গর্বের অধ্যায়—যেখানে শুধু জয় নয়, আধিপত্য নিয়েই তারা পা রাখল এশিয়ার মূল মঞ্চে।