রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের পরও জয় হাতছাড়া হলো বাংলাদেশের। ইনিংসের শেষ বলে ক্যাচ মিসে জয়ের সুযোগ নষ্ট হয়, ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। সেখানে একদিকে দারুণ এক ক্যাচ নিলেও অন্যটি ফসকে যায় বাংলাদেশের হাত থেকে। সুযোগ কাজে লাগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১১ রানের লক্ষ্য দেয়। ওয়াইড ও নো বলের সুবাদে শেষ দিকে ১ বলে ৫ রান পেলেও শেষ পর্যন্ত মাত্র ১ রানে হার মানে বাংলাদেশ। ফলে তিন ম্যাচ সিরিজ ১-১ সমতায় ফেরে।
মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পুরো ৫০ ওভারই স্পিনারদের দিয়ে করায়—যা ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে বিরল এক রেকর্ড। এই কৌশলেই তারা বাংলাদেশের ব্যাটিংকে চাপে ফেলে ২১৩ রানে আটকে দেয়। সেই রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের স্পিন ত্রয়ীও দারুণভাবে ম্যাচে ফিরলেও শেষ পর্যন্ত শেই হোপের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ম্যাচ টাই হয়ে যায়।
সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছিল বাংলাদেশ। অব্যবহৃত মিরপুরের পাঁচ নম্বর উইকেটে খেলা হলেও স্পিনাররা যে পার্থক্য গড়বে বুঝতে বাকি ছিল না কোন দলের। ক্যারিবীয়দের স্পিন ফাঁদে ৯৬ রানে শুরুর ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদেই পড়ে বাংলাদেশ। একে একে ফিরে যান সাইফ হাসান (৬), তাওহীদ হৃদয় (১২), নাজমুল শান্ত (১৫) ও মাহিদুল অঙ্কনরা (১৭)।
তবু ভরসা দিচ্ছিলেন সৌম্য সরকার। তিনি ৮৯ বল খেলে ৪৫ রান করে ক্যাচ দেন। তিন চার ও একটি ছক্কা মারেন। বাংলাদেশ ১০৩ রানে পঞ্চম ও ১২৮ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায়। সেখান থেকে দুইশ’ ছাড়ানো পুঁজি এনে দেন মিরাজ-নুরুল হাসান ও রিশাদ। এর মধ্যে ক্যামিও ইনিংস খেলা রিশাদ ১৪ বলে ৩৯ রান করেন। তিনটি করে চার ও ছক্কা মারেন তিনি। সোহান ২৪ বলে ২৩ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেন। দুটি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। নাসুম ১৪ রান যোগ করেন। মিরাজ ৫৮ বলে ৩২ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন।
জবাব দিতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেখান থেকে দ্বিতীয় উইকেটে ৫২ রানের জুটি পেলেও ১০৩ রানে হারায় পঞ্চম উইকেট। ১৩৩ রানে তাদের ৭ উইকেট নিয়ে ম্যাচ হাতে নিয়ে আসে বাংলাদেশ। সেখান থেকে শেই হোপ ও জাস্টিন গ্রেভস ৪৪ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ কঠিন বানিয়ে ফেলেন। গ্রেভস ২৬ করে রান আউট হলে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত হোপেই ভেঙেছে আশা। তিনি ৬৭ বলে ৫৩ রান করে অপরাজিত থাকেন। চারটি চারের শট মারেন তিনি। শেষ ওভারে বল হাতে নিয়ে ক্যারিবীদের আটকেই দিয়েছিলেন সাইফ। একটা উইকেট তুলে নেন তিনি। শেষ বলে রাখেন ৩ রান। ওই বলে খেরি পেরি ক্যাচ দিলেও তা বেশ খানিকটা দৌড়ে গিয়ে লাফিয়ে পড়েও গ্লাভস বন্দি করতে পারেননি সোহান।
অথচ ম্যাচে অধিনায়ক মিরাজ ছাড়া হাত ঘুরানো চার স্পিনারই উইকেট নিয়েছেন। রিশাদ হোসেন তিনটি এবং নাসুম ও তানভীর দুটি করে উইকেট তুলে নেন। সাইফ নেন এক উইকেট। মিরাজ ১০ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে উইকেট শূন্য ছিলেন। মুস্তাফিজ ৮ ওভারে দেন ৪০ রান। এর আগে আফগানদের হয়ে গুড়াকেশ মোতি ৩ উইকেট নেন। দুটি করে উইকেট নেন আকিল হোসেন ও আলিস আথানজে।
এসআর