বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আমাদের মৃত্যুকে সবসময় স্মরণে রাখতে হবে। মৃত্যু অবধারিত—নির্ধারিত সময়েই আমাদের এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হবে। তাই প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগিয়ে নেক আমলের মাধ্যমে মৃত্যুর প্রস্তুতি গ্রহণ করা উচিত।
তিনি বলেন, আমরা হারাম খাবো না, কবিরা গুনাহ করবো না, ফরজ ত্যাগ করবো না, ব্যভিচার ও পাপাচারে লিপ্ত হবো না। সালাত, পর্দা ও পরিবারকে দ্বীনের পথে পরিচালিত রাখতে হবে। সমাজ ও রাষ্ট্রে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের জন্য জান-মাল দিয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের সাবেক আমির দেওয়ান সিরাজুল ইসলাম মতলিবের জানাজায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। জানাজার ইমামতি করেন অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার নিজেই।
তিনি আরও বলেন, ইসলামী আন্দোলনের শিক্ষা দেওয়ান মতলিব ভাইয়ের জীবনে বাস্তব রূপ লাভ করেছিল। আমরা অনেক কিছু বলি, কিন্তু জীবনে তা বাস্তবায়ন করতে পারি না। তবে মতলিব ভাই সদাচার, বিনয়, ভদ্রতা ও ধৈর্যের মাধ্যমে মানুষকে আকৃষ্ট করতেন। তিনি ছিলেন একজন অনন্য ব্যক্তিত্ব।
মৃত্যুর গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন: “মানুষের মৃত্যুর পর তার সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায়, তবে তিনটি আমল চলমান থাকে—সদকায়ে জারিয়া, উপকারি জ্ঞান এবং নেক সন্তান।”
জানাজার পূর্ব আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমির মো. ফখরুল ইসলাম, সিলেট জেলা আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, মৌলভীবাজার জেলা আমির ইঞ্জিনিয়ার মো. সায়েদ আলী, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম ময়ূন, খেলাফত মজলিসের জেলা সভাপতি মাওলানা ফখরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, হবিগঞ্জ জেলা আমির হাজী মাওলানা মোখলেসুর রহমান এবং সুনামগঞ্জ জেলা আমির মাওলানা তোফায়েল আহমদ খান।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা নায়েবে আমির হাফেজ মাওলানা আনোয়ার হোসেন খান, জেলা সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন, সিলেট মহানগরী সেক্রেটারি মো. শাহজাহান আলী, মৌলভীবাজার জেলা নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, সেক্রেটারি মো. ইয়ামির আলী, ঢাকা পল্টন থানা আমির শাহীন আহমদ খান, হবিগঞ্জ জেলা সেক্রেটারি কাজী মহসিন আহমদ, মাওলানা আহমদ বেলাল, আব্দুর রহিম রিপন এবং মরহুমের বড় ছেলে দেওয়ান শরীফুজ্জামান চৌধুরী।
উল্লেখ্য, বুধবার (১৮ জুন) সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে সিলেট ইবনে সিনা হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বার্ধক্যজনিত রোগে দেওয়ান সিরাজুল ইসলাম মতলিব ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি ৬ পুত্র ও ৪ কন্যাসন্তানের জনক ছিলেন। স্ত্রী, সন্তান, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
দেওয়ান সিরাজুল ইসলাম মতলিব দীর্ঘদিন মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের আমির ছিলেন। তিনি জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য এবং সিলেট আঞ্চলিক বিভাগের টিম সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে তিনি মৌলভীবাজার-৩ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। জীবদ্দশায় তিনি ১৫টিরও বেশি গ্রন্থ রচনা করেছেন।
এসআর/আরএন