পঞ্চগড়ের বোদায় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয় ঝাঁড়ু না দেয়ায় পিটিয়েছেন নৈশপ্রহরী কাম দপ্তরি। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে গেলে মব সৃষ্টিকারী বলে অভিহিত করেছেন প্রধান শিক্ষিকা।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার বোদা উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের ৬০ নং নয়াদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
জানা যায়, নয়াদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবু বক্কর সকালে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলে নৈশপ্রহরী কাম দপ্তরি জাহিদুল ইসলাম ওই শিক্ষার্থীকে হাতে ঝাঁড়ু ধরিয়ে দিয়ে বিদ্যালয়ের সকল শ্রেণীকক্ষ ঝাঁড়ু দিতে বলে। শিক্ষার্থী আবু বক্কর ঝাঁড়ু রেখে দিতেই দপ্তরি জাহিদুল ওই শিক্ষার্থীকে মারতে উদ্যত হয়। আবু বক্কর ভয়ে দৌঁড়ে পালাতে চেষ্টা করলে দপ্তরি জাহিদুল শিক্ষার্থী আবু বক্করকে ধরে দুই গালে বেধম চর থাপ্পড় দিতে থাকে। অন্যান্য শিক্ষার্থীরা এ সময় ভয়ে দিকবিদিক ছুটোছুটি করতে থাকলে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়।
ইতিমধ্যে এই খবর জানাজানি হলে সকল অভিভাবকরা দ্রুত বিদ্যালয়ে চলে আসেন এবং ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে প্রধান শিক্ষিকা খালেদা আক্তারের স্বরণাপন্ন হন। এ সময় প্রধান শিক্ষিকা এ রকম কোনো ঘটনা শোনেন নি বা জানেন না বলে উপস্থিত সকলকে মব সৃষ্টিকারী হিসেবে অভিহিত করেন।
একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাফি জানায়, তিনি (দপ্তরি জাহিদুল) আমাদেরকে দিয়ে প্রতিদিনই স্কুল ঝাঁড়ু দেয়া, টয়লেট পরিস্কার করাসহ মাঠ পরিস্কার করে নেন। একটু এদিক সেদিক হলেই মেরে গাল মুখ লাল করে ফেলেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা জুয়েল ইসলাম বলেন, পড়াশোনা করে উন্নত মানুষ গড়ার জন্য আমাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাই। আর বিদ্যালয়ে সন্তানদের দিয়ে ঝাড়ুমোছার কাজ করানো হয়, না করতে চাইলে কোমলমতি শিশুদের প্রহার করে শারীরিক ও মানসিক ভাবে বিপদগ্রস্ত করে তোলে এখানকার দপ্তরি জাহিদুল। একজন অভিভাবক হিসেবে নিজেকে ভীষণ অসহায় বোধ করছি। এ রকম ঘটনা যেন না ঘটে সে কারণে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
নয়াদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাবেয়া বেগম বলেন, 'দপ্তরির কাছে এ রকম কিছু এখনও শুনিনি। লোকজন এখানে এসে মব সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। আমি সকলের সহযোগিতা চাই।'
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ''শিক্ষার্থীদের গায়ে শিক্ষকরাও হাত দিতে পারবেন না। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। যথাযথ প্রক্রিয়ায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
এসআই/এমএ