টানা বৃষ্টি এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে মৌলভীবাজার জেলার চারটি নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার জুড়ী নদীতে বিপৎসীমার ১০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া মনু, ধলাই এবং কুশিয়ারা নদ-নদীর পানি বেড়েছে। অব্যাহত বৃষ্টি থাকলে বন্যার শঙ্কা রয়েছে।
শনিবার (৩১ মে) ও গতকাল শুক্রবার ভোর থেকে দিনব্যাপী জেলা সদরসহ সাত উপজেলায় মুষলধারে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত দুদিন টানা বর্ষণ এবং উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার মনু, ধলাই, জুড়ী ও কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, শনিবার বিকেল ৩টায় মনু নদীর রেলওয়ে ব্রিজে পানি ২০২ সেন্টিমিটার, মনু নদীর চাঁদনীঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার, ধলাই নদীর রেলওয়ে ব্রিজে পানি ২৫০ সেন্টিমিটার এবং কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে পানি ১২৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে জুড়ী নদীর পানি ১০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জানা গেছে, গত বছর বর্ষাকালে টানা ভারী বর্ষণের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলায় মনু ও ধলাই নদ-নদীর বিভিন্ন স্থানে একাধিক ভাঙন দেখা দেয়। এই ভাঙনের কারণে পানির স্রোত লোকালয়ে প্রবেশ করলে বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যায়, যার ফলে ঘরবাড়ি, রাস্তা-ঘাট, ফসলি জমি ও ফিসারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যাকবলিতরা গৃহহীন হয়ে আশ্রয়কেন্দ্র ও নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। গবাদিপশুও বিপাকে পড়ে।
এছাড়া, গত বছর মনু ও ধলাই নদ-নদীর ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত করার আগেই চলতি মৌসুমে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে, যার কারণে নদীতীরবর্তী এলাকার সাধারণ মানুষ দুশ্চিন্তায় পড়ে রয়েছেন।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন ওয়ালিদ বলেন, “জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া কুশিয়ারা, মনু ও ধলাই নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি। আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই, বৃষ্টি থেমে গেলে পানি কমে যাবে।”
আরএ/আরএন