চলতি বছর রসায়নবিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের জন্য এ বছর রসায়নে নোবেল জিতেছেন তিন বিজ্ঞানী। তারা হলেন- সুসুমু কিতাগাওয়া, রিচার্ড রবসন এবং ওমার এম ইয়াগি। তাদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে ‘মেটাল অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক’ (MOF) উদ্ভাবনের জন্য, যা আধুনিক রসায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান হিসেবে স্বীকৃত।
সুসুমু কিতাগাওয়া জাপানের কিউতো বিশ্ববিদ্যালয়ে, রিচার্ড রবসন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ওমার এম ইয়াগি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন।
নোবেল কমিটির মতে, তারা এমন আণবিক কাঠামো তৈরি করেছেন, যেগুলোতে বড় স্পেস থাকায় বিভিন্ন গ্যাস ও রাসায়নিক পদার্থ সহজে চলাচল করতে পারে।
এই কাঠামোর নাম হলো ‘মেটাল অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্কস’। এগুলো ব্যবহার করে মরুভূমির বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ, কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস ধরে রাখা , বিষাক্ত গ্যাস জমিয়ে রাখা এবং বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার কাজও করা যায়।
তাদের বানানো এ কাঠামোতে ধাতব আয়নগুলো কোণার খুঁটির মতো কাজ করে। আর সেগুলোকে যুক্ত করা হয় লম্বা লম্বা জৈব (কার্বন-ভিত্তিক) অণু বা মলিকিউল দিয়ে। এই ধাতব আয়ন ও অণুগুলো একসঙ্গে মিলে এমন একধরনের স্ফটিক তৈরি করে যার ভেতরে অনেক বড় বড় গহ্বর বা ছিদ্র থাকে। এই ছিদ্রযুক্ত পদার্থগুলোকেই মেটাল অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্কস (এমএফও) বলা হয়।
এমএফও-র জন্য ব্যবহৃত উপাদানগুলো খুব সহজেই রদবদল করা যায়। ফলে রসায়নবিদরা নিজেদের প্রয়োজনমতো কাঠামোটিকে নকশা করতে পারেন। এতে তারা নির্দিষ্ট পদার্থকেই আটকে রাখতে পারেন। এছাড়া এই কাঠামো দিয়ে রাসায়নিক বিক্রিয়া ও বিদ্যুৎ পরিবহণ করা যায়।
এদিকে এখন পর্যন্ত রসায়নে ১১৬ বার নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এ ক্যাটাগরিতে সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে ২০১৮ সালে ৯৭ বছর বয়সে নোবেল জেতেন জন বি গুডএনাফ। অপরদিকে ১৯৩৫ সালে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে সম্মানজনক এ পদক জেতেন ফেদ্রিক জোলিয়ট।
১৯০১ সাল থেকে দেওয়া হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার নোবেল। এ পুরস্কারটির নামকরণ করা হয়েছে সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নাম অনুসারে। ঊনবিংশ শতকের এই বিজ্ঞানী শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিনামাইট আবিষ্কার করে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছিলেন। তিনি উইল করে গিয়েছিলেন যে তার যাবতীয় অর্থ থেকে যেন প্রতি বছর পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, শান্তি ও সাহিত্য— এই ৫টি খাতে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তিদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। এই পুরস্কারের নামকরণ হবে তার নামে। ১৯৬৯ সাল থেকে এই ৫ বিভাগের সঙ্গে যুক্ত হয় অর্থনীতিও।
এসআর