Thursday | 23 October 2025 | Reg No- 06
Epaper | English
   
English | Thursday | 23 October 2025 | Epaper
BREAKING: দেশকে এগিয়ে নিতে নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজন: মির্জা ফখরুল      টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ      সহজেই জয় পেল অস্ট্রেলিয়া      ইসরায়েলের পার্লামেন্টে পশ্চিম তীর দখলের বিল পাস      জেনেভা ক্যাম্পে দু'গ্রুপের সংঘর্ষে যুবক নিহত      কয়েকজন উপদেষ্টাকে নিয়ে আপত্তি জামায়াতের, জানালেন প্রধান উপদেষ্টাকে      সেন্টমার্টিন ভ্রমণে মানতে হবে ১২ নির্দেশনা      

তপ্ত রোদেও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণপিপাসু মানুষের মাঝে আনন্দ-উচ্ছ্বাস

Published : Tuesday, 1 April, 2025 at 6:59 PM  Count : 371

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের জনপ্রিয় স্পট সুগন্ধা পয়েন্ট; যেখানে সারা বছর পর্যটকদের আনাগোনায় মুখর থাকে। ঈদের দ্বিতীয় দিন, মঙ্গলবার সকাল থেকে সৈকতের সুগন্ধাসহ সবক’টি পয়েন্ট লোকে-লোকারণ্য হয়ে ওঠে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। যেদিকে চোখ যায়, শুধু মানুষ আর মানুষ! যেন বিস্তৃত বালিয়াড়ির কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই নেই।

কারও মনে আনন্দ প্রথমবার সমুদ্র দেখার, আবার কেউ সমুদ্রের নোনাজলের স্পর্শে উচ্ছ্বসিত। তপ্ত রোদেও ভ্রমণপিপাসু মানুষের আনন্দ-উচ্ছ্বাসে কমতি নেই। অধিকাংশ পর্যটকের মূল আকর্ষণ সমুদ্রস্নান—সাগরের লোনাজলে ডুব দিয়ে আনন্দ উপভোগ করা। এমনকি ঈদের আনন্দের উচ্ছ্বাসের কাছে সাগরের উত্তাল ঢেউও যেন হার মেনেছে!

কেউ বসে আছে বিচ ছাতার (কিটকটে) নিচে, আবার কেউ সৈকতের বালিয়াড়িতে দৌড়ঝাঁপে মেতে উঠেছে। কেউ বীচ বাইক চালাচ্ছে, কেউবা ঘোড়ায় চড়ে ছবি তুলছে। কোলাহলময় যান্ত্রিক জীবনের অবসাদ কাটাতে ছুটে আসা ভ্রমণপিপাসুরা বলছেন, "প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি কক্সবাজার ঘুরতে এসে আমরা তৃপ্ত-পরিতৃপ্ত।"

পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঈদের টানা ছুটির দ্বিতীয় দিনেও লাখো পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে সৈকত নগরী কক্সবাজার। রমজানের পুরো এক মাস পর্যটকশূন্য থাকলেও ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে এখন উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

শুধু পর্যটকরাই নন, স্থানীয় দর্শনার্থীরাও সৈকতে ভিড় জমাচ্ছেন। কাঙ্ক্ষিত পর্যটক সমাগম ঘটায় হোটেল-মোটেলসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা খুশি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের দ্বিতীয় দিনে সাড়ে পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেলের অন্তত ৮০% কক্ষ বুকড রয়েছে, এবং তৃতীয় দিন থেকে শতভাগ কক্ষ বুকড থাকবে। আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত পর্যটকদের ঢল অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কক্সবাজার আবাসিক হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, "ঈদের প্রথম দিন তেমন পর্যটক আসেননি। তবে ১ এপ্রিল লাখের অধিক পর্যটক কক্সবাজারে এসেছেন, এবং সন্ধ্যার পর আরও অনেকে আসবেন। ৫ এপ্রিল পর্যন্ত পর্যটকরা হোটেল বুকিং দিয়েছেন। আমরা আশা করছি, গড়ে প্রতিদিন দেড় লাখ করে পাঁচ দিনে সাড়ে সাত লাখ পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে আসবেন।"

পর্যটক বাড়লে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে বলে অভিযোগ ওঠে। তবে আবুল কাশেম সিকদার বলেন, "প্রতি হোটেলের কক্ষভাড়ার তালিকা টাঙানো থাকে, এবং পর্যটকদের তালিকা দেখে কক্ষভাড়া পরিশোধের নির্দেশনা দেওয়া হয়। অধিকাংশ হোটেলে অনলাইনে অগ্রিম বুকিংয়ের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।"

হোটেল দি স্যান্ডি বিচের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রহমান বলেন, "পর্যটকের আশানুরূপ সমাগম হওয়ায় সাগরপাড়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা খুশি। তবে অতিরিক্ত পর্যটকের চাপে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে হয়রানির শিকার হতে হয়। তাই কক্সবাজারে ভ্রমণের আগে আগাম হোটেল বুকিং দেওয়া উচিত।"

হোটেল কক্স-টুডের ব্যবস্থাপক আবু তালেব শাহ বলেন, "এখন পর্যটকে ভরপুর কক্সবাজার, এবং এই পরিস্থিতি টানা পাঁচ দিন অব্যাহত থাকবে।"

সৈকতের লাবণী পয়েন্টে কথা হয় ঢাকা থেকে আসা শিক্ষক আবেদিন নাহিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, "কক্সবাজারে আসা মানেই আনন্দ। এখানকার অথৈ নীল জলরাশি আর শীতল হাওয়া মন থেকে ক্লান্তি দূর করে দেয়। ফিরে গেলে নিজের কর্মস্থলে সজীবতা পাওয়া যায়।"

রাজশাহীর ব্যবসায়ী রফিকুল আনোয়ার জানান, "সমুদ্র, পাহাড়, ঝরনা, বৌদ্ধ বিহার আর প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য কক্সবাজারকে সত্যিই মনোমুগ্ধকর করে তোলে।"

এদিকে, পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়েও যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ পর্যটক সমুদ্রস্নানে ব্যস্ত থাকায়, লাইফগার্ড সদস্যরা সতর্ক নজর রাখছেন যাতে কেউ দুর্ঘটনার শিকার না হন। সী সেইফ লাইফগার্ডের সুপারভাইজার ওসমান গনি বলেন, "মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত অন্তত এক লাখ পর্যটক সৈকতে এসেছেন, এবং বেশিরভাগই সাগরে নেমে স্নান করেছেন। আমরা সবাইকে নিরাপদে গোসল করার নির্দেশনা দিচ্ছি।"

পর্যটক হয়রানি রোধে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পরিদর্শক মোহাম্মদ সোহেল। তিনি জানান, "সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ, হিমছড়ি ঝরনা, ইনানী ও পাটুয়ারটেকের পাথুরে সৈকত, শহরের বার্মিজ মার্কেট, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক এবং রামুর বৌদ্ধ বিহারসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, নিয়মিত টহলের পাশাপাশি জেলা পুলিশের টহলও চলছে। এছাড়া অভিযোগ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে পর্যটকদের অভিযোগ দ্রুত সমাধান করা হচ্ছে।"

এসইউ/আরএন


LATEST NEWS
MOST READ
Also read
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000.
Phone: PABX- 41053001-06; Online: 41053014; Advertisement: 41053012.
E-mail: [email protected], news©dailyobserverbd.com, advertisement©dailyobserverbd.com, For Online Edition: mailobserverbd©gmail.com
🔝
close