বর্ণাঢ্য আয়োজন ও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আজ ২৫ নভেম্বর (মঙ্গলবার) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। এ বছর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রমের ৩৪ বছর পূর্ণ করে ৩৫তম বর্ষে পদার্পণ করেছে।
দিবসটি উপলক্ষে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেট ‘শহিদ মীর মুগ্ধ তোরণ’ থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি দ্বিতীয় গেট ঘুরে অদম্য বাংলা চত্বরে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ গোলাম রহমানের নেতৃত্বে বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হারুনর রশীদ খান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ নূরুন্নবী, বিভিন্ন স্কুলের ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধান, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক, প্রভোস্ট, বিভাগীয় পরিচালকসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।
শোভাযাত্রায় আরও উপস্থিত ছিলেন খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ রেজাউল হক, সিনিয়র সাংবাদিক শেখ দিদারুল আলম, আবু তৈয়ব মুন্সি, এহতেশামুল হক শাওন, এস এম হাবিব, বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফউজ্জামান, মহাসচিব অ্যাড. শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজ, খুলনা সিভিল সোসাইটির আহ্বায়ক অ্যাড. শেখ শাহনওয়াজ আলী, সদস্য সচিব মহেন্দ্র নাথ সেন, খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাড. বাবুল হাওলাদার, বৃহত্তর আমরা খুলনাবাসীর সভাপতি ডা. শেখ নাসির উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান খোকনসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
শোভাযাত্রা শেষে শান্তির প্রতীক পায়রা, বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে দিবসের কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। পরে সকাল ১১টায় সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ গোলাম রহমান।
উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ নাজমুল আহসান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হারুনর রশীদ খান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ নূরুন্নবী এবং খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. শামীম আহমেদ কামাল উদ্দিন খান।
সভায় বক্তারা বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল হলো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে রাজনৈতিক নেতা, নাগরিক সমাজ, পেশাজীবী ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট উত্তরণ ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আনন্দঘন এই দিনে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন বক্তারা।
বক্তারা আরও বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটরা দেশ-বিদেশে সফলতার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন—এটিই বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় অর্জন। বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণের পর শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ‘কোলাবরেটিভ রিসার্চ গ্রান্ট প্রোগ্রাম’ ও ‘টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্টশিপ’ চালু বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি ইমপ্যাক্টফুল উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আরও সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও বক্তারা উল্লেখ করেন।
আলোচনা সভায় সমাপনী বক্তব্য রাখেন দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও শিক্ষা স্কুলের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোঃ ইমদাদুল হক। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য-সচিব ও ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ নাজমুস সাদাত।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। একই অনুষ্ঠানে গত বছরের কৃতিত্ব অর্জনকারী শিক্ষার্থী ও সংগঠনগুলোকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারারদের সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়। পরে দিবসটি উপলক্ষে কেক কাটা হয়। অদম্য বাংলা প্লাজায় বিভাগ/ডিসিপ্লিনসমূহের গত বছরের অর্জন ও আগামী বছরের পরিকল্পনা ডিসপ্লে বোর্ডের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়।
এ ছাড়া বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল এবং মন্দিরে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক, রাস্তা, বিভিন্ন ভবন, হলসমূহ ও অন্যান্য স্থাপনায় দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জা করা হয়।
এসএস/আরএন