Wednesday | 26 November 2025 | Reg No- 06
Epaper | English
   
English | Wednesday | 26 November 2025 | Epaper
BREAKING: কড়াইল বস্তিতে আগুন: পানি সংকটে নিয়ন্ত্রণে বেগ      কড়াইল বস্তিতে আগুন      উপদেষ্টা পরিষদে গণভোট অধ্যাদেশ অনুমোদন      বগুড়ায় দুই শিশু ও মায়ের মরদেহ উদ্ধার      প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি: হাসিনা-রেহানা-টিউলিপের মামলার রায় ১ ডিসেম্বর      মেট্রোরেলে চালু হলো ঘরে বসে অনলাইন রিচার্জ      ভালো নির্বাচনের জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন: সিইসি      

সাবেক আইজিপি মামুনের ৫ বছরের কারাদণ্ড

জুলাই হত্যা মামলায় শেখ হাসিনা-কামালের মৃত্যুদণ্ড

Published : Monday, 17 November, 2025 at 2:51 PM  Count : 112

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে তাদের নামে দেশে থাকা সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

এদিকে, মামলার রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই নির্দেশ দেন। অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এ দিন দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে ছয় অধ্যায়ে ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ের প্রথম অংশ পড়া শুরু করেন বিচারিক প্যানেলের সদস্য বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। 

২ ঘণ্টা ১০ মিনিটের সংক্ষিপ্ত রায় পড়া শেষে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল। রায়ে তাদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেওয়া হয়। রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মানুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) এ মামলার রায়ের জন্য সোমবার দিন ঠিক করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।

এ মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনও আসামি। তাদের মধ্যে মামুন আসামি থেকে রাজসাক্ষী বনে যান এবং দায় স্বীকার করে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন।

২০২৪ সালের ০৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে প্রথম মামলা হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালের বিচার কাজ শুরু হয় গত বছরের ১৭ অক্টোবর। ওইদিনই এ মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।

চলতি বছরের ১৬ মার্চ সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে এ মামলায় আসামি করার আবেদন করে প্রসিকিউশন। পরে ট্রাইব্যুনাল তাতে সম্মতি দেন।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা চলতি বছরের ১২ মে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। আর প্রসিকিউশন শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে গত ০১ জুন ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে।

এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়। সেগুলো হলো- গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার ‘উসকানিমূলক বক্তব্য’ দেওয়া; হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ দেওয়া; রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ; রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ এবং আশুলিয়ায় ছয় জনকে পুড়িয়ে হত্যার নির্দেশ দেওয়া।

এই পাঁচটি অভিযোগে গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।

আন্দোলন দমনে ১৪০০ জনকে হত্যার উসকানি, প্ররোচণা ও নির্দেশ দেওয়া, ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসেবলিটি’ এবং ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজের’ মোট পাঁচটি অভিযোগে গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে পালিয়ে যান। এর মধ্য দিয়ে হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।

মামলার তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল পলাতক। দু'জনই এখন ভারতে অবস্থান করছেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার একমাত্র আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ বা রাজসাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন।

এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে মারণাস্ত্র ব্যবহার করে নিরীহ, নিরস্ত্র দেড় হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা এবং ৩০ হাজার মানুষকে আহত করা হয়েছিল।

শুরুতে এ মামলার একমাত্র আসামি ছিলেন শেখ হাসিনা। গত ১৬ মার্চ সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও এ মামলায় আসামি করা হয়। সবশেষ গত ১২ মে মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের নাম আসে।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ মোট ৫৪ জন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয় গত ৮ অক্টোবর। এরপর গত ১২ অক্টোবর যুক্তিতর্ক শুরু হয়ে শেষ হয় গত ২৩ অক্টোবর। সবশেষ গত ১৩ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল মামলার রায় ঘোষণার জন্য ১৭ নভেম্বর তারিখ ধার্য করেন।

পলাতক থাকায় এ মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার।

তিনি জানিয়েছেন, ট্রাইব্যুনাল আইনে পরিষ্কার বলা আছে, রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে। তবে আপিলের সুযোগ নিতে হলে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে আত্মসমর্পণ করতে হয়। অথবা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হাতে গ্রেপ্তার হলেও আসামি আপিলের সুযোগ পান।

এ বছরের শুরুর দিকে শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যের অডিও রেকর্ড ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে তাকে বলতে শোনা যায়- ‘২২৬ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’। তার এ বক্তব্য বিচারপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা উল্লেখ করে আদালত অবমাননার মামলা করেছিল প্রসিকিউশন।

আদালত অবমাননার ওই মামলায় গত ২ জুলাই শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

এমএ
আরও পড়ুন


LATEST NEWS
MOST READ
Also read
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000.
Phone: PABX- 41053001-06; Online: 41053014; Advertisement: 41053012.
E-mail: [email protected], news©dailyobserverbd.com, advertisement©dailyobserverbd.com, For Online Edition: mailobserverbd©gmail.com
🔝
close