Wednesday | 26 November 2025 | Reg No- 06
Epaper | English
   
English | Wednesday | 26 November 2025 | Epaper
BREAKING: কড়াইল বস্তিতে আগুন: পানি সংকটে নিয়ন্ত্রণে বেগ      কড়াইল বস্তিতে আগুন      উপদেষ্টা পরিষদে গণভোট অধ্যাদেশ অনুমোদন      বগুড়ায় দুই শিশু ও মায়ের মরদেহ উদ্ধার      প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি: হাসিনা-রেহানা-টিউলিপের মামলার রায় ১ ডিসেম্বর      মেট্রোরেলে চালু হলো ঘরে বসে অনলাইন রিচার্জ      ভালো নির্বাচনের জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন: সিইসি      

‘পা দিয়ে চেপে ধরে মেজর সিনহার মৃত্যু নিশ্চিত করেছিলেন ওসি প্রদীপ’

Published : Sunday, 23 November, 2025 at 10:11 PM  Count : 42

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের হত্যা মামলার রায়ে হাইকোর্ট উল্লেখ করেছে, মামলার আসামি প্রদীপ কুমার দাশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে ভিকটিমের বুকের বাম পাঁজরে জুতা পরা পা দিয়ে আঘাত করে দুটি হাড় ভেঙে এবং গলার বাম পাশে জুতা পরা পা দিয়ে চাপ দিয়ে মেজরের মৃত্যু নিশ্চিত করেছিলেন। এই তথ্য প্রমাণিত হয়েছে প্রসিকিউশন পক্ষের সাক্ষী ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে।

হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের বেঞ্চ সম্প্রতি ৩৭৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে। ২ জুন দেওয়া এই রায়ে বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখা হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী এবং টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন– বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, সাগর দেব, রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানায় পুলিশের করা মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।

হাইকোর্টের রায়টি লিখেছেন বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান। রায়ে একমত পোষণ করেছেন বিচারপতি মো. সগীর হোসেন।

রায়ে হাইকোর্ট বলেন, ‘সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রদীপ কুমার দাশ আলোচ্য হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড, পরিকল্পনাকারী ও ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সে ভিকটিম মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের বুকের বাম পাঁজরে জুতা পরা পা দিয়ে জোরে আঘাত করে তার বুকের দুটি হাড় ভাঙাসহ ভিকটিমের গলার বাম পাশে জুতা পরা পা দিয়ে চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করেছে, যা প্রসিকিউশন পক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যসহ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন (প্রদর্শনী-১০) দ্বারা প্রমাণিত।

এ ছাড়া প্রসিকিউশন পক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্য, দণ্ডপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট আসামিদের অপরাধ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও শক্তিশালী পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য পর্যালোচনান্তে প্রমাণিত হয়েছে যে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি লিয়াকত আলী পূর্ব পরিকল্পনা মতে ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে নিরস্ত্র ভিকটিম মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানকে হত্যার উদ্দেশে তার (লিয়াকত আলীর) হাতে থাকা সরকারি পিস্তল দিয়ে ভিকটিমের শরীরের ঊর্ধাংশের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে পরপর চারটি গুলি করেছে এবং ওই গুলির আঘাতে ভিকটিমের মৃত্যু হয়েছে মর্মে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে (প্রদর্শনী-১০) উল্লেখ করা হয়েছে।’

রায়ে আরও বলা হয়, ‘যেহেতু আসামি প্রদীপ কুমার দাশ আলোচ্য হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী এবং ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে ভিকটিম মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের বুকে আঘাত করে বুকের দুটি হাড় ভাঙাসহ গলার বামপাশে পা দিয়ে চেপে ধরে ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে এবং যেহেতু অপর আসামি লিয়াকত আলী পূর্বপরিকল্পনা মতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হত্যার উদ্দেশে ভিকটিমের ওপর পরপর চারটি গুলি করেছে এবং ওই গুলির আঘাতেই মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের মৃত্যু হয়েছে মর্মে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সেহেতু আসামি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীকে বিচারিক আদালত সঠিকভাবে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় বর্ণিত সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছেন।’

‘এ ছাড়া যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নন্দ দুলাল রক্ষিত, সাগর দেব, রুবেল শর্মা, মো. নুরুল আমিন, মো. আয়াজ ওরফে আয়াছ ও মো. নেজামুদ্দিনের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে ষড়যন্ত্র, সহায়তা ও সাধারণ অভিপ্রায়ের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ বিচারিক আদালত তাদের অপরাধের ধরন বিচার বিশ্লেষণ করে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় বর্ণিত মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছেন, যা সঠিক ও যুক্তিযুক্ত বলে আমরা মনে করি।’ সে কারণে তর্কিত রায়ে হস্তক্ষেপ করার কোনো অবকাশ নেই বলে রায়ে উল্লেখ করেন উচ্চ আদালত।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান।

এ ঘটনায় করা মামলার বিচার শেষে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত দুজনকে মৃত্যুদণ্ড, ছয়জনকে যাবজ্জীবন ও সাতজনকে খালাস দিয়ে রায় দিয়েছিলেন।

পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য (ডেথ রেফারেন্স) মামলার যাবতীয় কার্যক্রম হাইকোর্টে পাঠানো হয়।

পাশাপাশি দণ্ডিত আসামিরা আপিল ও জেল আপিল করেন। দণ্ডের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে ২ জুন রায় ঘোষণা করেন। রায়ে প্রদীপসহ দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড ও অপর ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন আদালত। এখন এ রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার আসামিপক্ষ আপিল বিভাগে আপিল করবে। এরপর আপিল বিভাগে মামলাটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে।

এসআর


LATEST NEWS
MOST READ
Also read
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000.
Phone: PABX- 41053001-06; Online: 41053014; Advertisement: 41053012.
E-mail: [email protected], news©dailyobserverbd.com, advertisement©dailyobserverbd.com, For Online Edition: mailobserverbd©gmail.com
🔝
close