বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'শেখ হাসিনার গণহত্যা মামলার রায়কে কেন্দ্র করে একটি মহল আবারও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চাইছে। আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।'
রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'আগামীকাল (সোমবার) যে ফ্যাসিস্ট হাসিনার গণহত্যার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে যে ট্রায়াল হয়েছে তার রায় বের হবে, এটা নিয়ে সারাদেশে এক ধরনের চরম অনিশ্চয়তা, এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে একটি মহল আবারও দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে। আমাদের আজকে রুখে দাঁড়াতে হবে।'
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে বিভ্রান্তিকর ও অস্বাভাবিক আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, 'আজকে বাংলাদেশের রাজনীতি এক ধরনের কনফিউজ পলিটিক্সের মধ্যে চলে গেছে। এমন সব ঘটনা ঘটছে, এমন সব উপাদান ঢুকছে, যা বাংলাদেশের মানুষ আগে কোনো দিন চিন্তাই করেনি। এগুলো বাংলাদেশের আত্মা নয়, সোল নয়। দুর্ভাগ্যক্রমে দেশ এক জটিল সংকটের মধ্যে রয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'অন্তর্বর্তী সরকারের নামে যারা এসেছে, তারা রাজনৈতিক কাঠামোকে একটা জায়গায় নেওয়ার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তা জনগণের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, তা এখনো বলা যায় না।'
বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আমরা বার বার বলেছি, নির্বাচনই হচ্ছে একমাত্র পথ, যা দিয়ে ট্রানজিশন করে গণতন্ত্রে যাওয়া সম্ভব। হতাশা আর অনিশ্চয়তার মধ্যেও এখন একটি সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে যে ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।'
তার অভিযোগ আছে, কিছু গোষ্ঠী পরিকল্পিত ভাবে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে চাইছে। নানা দাবি তুলে তারা নির্বাচনকে ব্যাহত, বিলম্বিত বা বন্ধ করতে চায়। কিন্তু দেশের মানুষ এখন চায় একটি নির্বাচিত সরকার, যার পেছনে জনগণের সমর্থন থাকবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'অর্থনীতির অবস্থা খুবই খারাপ হচ্ছে, নির্বাচন ছাড়া এটি আরও খারাপ হবে। আইন-শৃঙ্খলার অবস্থাও খারাপ, নির্বাচিত সরকার না থাকলে তা আরও অবনতির দিকে যাবে।'
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমি সব রাজনৈতিক দলকে বলবো আসুন, ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সামনে এগিয়ে যাই। মওলানা ভাসানীর আদর্শ অনুসরণ করে আমরা যেন এই দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারি।'
মওলানা ভাসানী মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে ও কৃষক দলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান প্রমুখ।
এমএ