দরিদ্র ছেলে-মেয়েদের পুষ্টির জোগান দিতে স্কুল ফিডিং প্রোগ্রামে ডিম যুক্ত করতে হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, আমাদের স্কুল ফিডিংয়ে দুধ দেওয়া হচ্ছে, সেখানে ডিমও যুক্ত করতে হবে।
শুক্রবার বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল ও ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ শাখার সহযোগিতায় সভাটি আয়োজন করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে— ‘ডিমে আছে প্রোটিন, খেতে হবে প্রতিদিন।’
ফরিদা আখতার বলেন, ডিম এমন একটি খাবার যার সঙ্গে দেশের সব শ্রেণির মানুষ জড়িত। এটি উৎপাদন ও খাদ্য—উভয়ের সঙ্গেই সম্পর্কিত। গরুর মাংস সবাই কিনতে না পারলেও সহজেই ডিম কেনা যায়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের শিশুদের ছয় বছর বয়সের মধ্যেই পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে। তাই স্কুল ফিডিং প্রোগ্রামে ডিম যুক্ত করা জরুরি। আমাদের ৮০ শতাংশ ডিম আসে প্রান্তিক পর্যায় থেকে। প্রান্তিক খামারিরাই এই ৮০ শতাংশ ডিম উৎপাদন করেন।
তিনি আরও বলেন, গ্রামের দরিদ্র নারীরাও দু-একটি করে মুরগি পালন করে পরিবারের পুষ্টির জোগান দেন।
কৃষিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে মুরগি পালন হুমকির মুখে পড়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। এছাড়া, হাওরের হাঁসের ডিম নিয়ে যথেষ্ট প্রচার না হওয়ার বিষয়টিও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, হাওরের হাঁসের ডিমের বিষয়ে প্রচার চালাতে হবে।
পুষ্টি বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের ‘কমপ্লিট ফুড’ নিয়ে আলোচনা করতে হবে। যেখানে সবজি, মাছ ও মাংসের কথাও থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ক্যান্সারের হার অনেক বেড়ে গেছে। প্রায় ঘরে ঘরে নারীরা ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। ডিম খেলে ক্যান্সার কমে—এ তথ্য প্রচার করতে হবে।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, মৌসুমভেদে ডিমের দাম ওঠানামা করে। এ বিষয়টি সামনে রেখে রিপোর্ট করতে হবে। কিন্তু খাদ্যের দাম কমে না। আমাদের সাত হাতের মধ্যে সংখ্যা কমাতে হবে। কারণ এখানে খামারিরা ন্যায্য দাম পান না, অথচ ভোক্তাদের বেশি দাম দিতে হয়। কাওরান বাজারে এসে অনেক হাত ঘুরে পণ্য পৌঁছায়। এসব অনিয়ম কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক এবং ওয়াপসা বিবির সাবেক সভাপতি মসিউর রহমান।
প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইলিয়াস হোসেন ও অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান সিকদার।
আরএন