লক্ষ্মীপুরে যুবদল নেতা মাহবুব আলম বাচ্চুকে মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেওয়ার একটি অডিও কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী বাহিনী প্রধান ও জোড়া খুন মামলার প্রধান আসামি আবুল কাশেম জিহাদী এই হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে এ ঘটনায় জেলা যুবদল প্রতিবাদ জানিয়েছে। জেলা যুবদলের সভাপতি আব্দুল আলিম হুমায়ুন ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রশিদুল হাসান লিংকনের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী যুবদল নেতা বাচ্চু সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, অভিযুক্ত কাশেম জিহাদী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থেকে নিজ নামে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন। তিনি চন্দ্রগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল রাতে জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান এবং জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব হোসেনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি হিসেবে তার নাম উঠে আসে। এরপর থেকেই তিনি দেশের বাইরে পলাতক রয়েছেন।
পালিয়ে থাকলেও তিনি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে মোবাইলে কল দিয়ে বিভিন্নজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী মাহবুব আলম বাচ্চু সদর (পশ্চিম) উপজেলা যুবদলের সদস্য এবং বশিকপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি বশিকপুর ইউনিয়নের বিরাহিমপুর গ্রামের হাজী আবুল কালামের ছেলে।
বাচ্চু বলেন, “বশিকপুরের পোদ্দার বাজারে আমার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে কাশেম জিহাদী ও তার ভাই লেদা আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে। তারা আমার গায়ে হাত তোলে, দোকান থেকে টাকা ও মোবাইল লুট করে। একপর্যায়ে আমি দোকান ছেড়ে দিতে বাধ্য হই। সম্প্রতি তার ভাই লেদাকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করলে জিহাদী আমাকে দায়ী করে। এরপর ৮ অক্টোবর দুপুরে সে আমাকে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বিষয়টি জানাজানি হলে সে আবারও হোয়াটসঅ্যাপে ভয়েস মেসেজ দিয়ে গালিগালাজ ও হুমকি ধামকি দিতে থাকে।”
জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রশিদুল হাসান লিংকন বলেন, “কাশেম জিহাদী একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী। সে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি, যুবদল এবং তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের হত্যা, বাড়ি-ঘরে আগুন দেওয়া, অপহরণ ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধের সাথে জড়িত। বর্তমানে পলাতক থেকেও সে এসব অপরাধ অব্যাহত রেখেছে। আমরা প্রশাসনের কাছে জিহাদীসহ সকল সন্ত্রাসী ও খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ হাসান জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “অভিযোগটি পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরএইচ/আরএন