পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও ১৯৭৩ সালের দেশের প্রথম জাতীয় সংসদের সদস্য মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাঙামাটিতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির আয়োজনে শহরের আশিকা কনভেনশন হলে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জনসংহতি সমিতি রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি ডা. গঙ্গা মানিক চাকমা। প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শিশির চাকমা এবং প্রধান আলোচক ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এম এন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিজয় কেতন চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ভবতোষ দেওয়ান, বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট জুয়েল দেওয়ান, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক আশিকা চাকমা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রোমেন চাকমা প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা সংবিধান প্রণয়নের ক্ষেত্রে একটি কার্যকর ও যুক্তিসঙ্গত ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু উগ্র জাতীয়তাবাদী শাসকগোষ্ঠী তাঁর প্রস্তাবিত যৌক্তিক সংশোধনীগুলো আমলে নেয়নি। বরং অনেক সময় তাঁকে তুচ্ছতাচ্ছিল্যের মাধ্যমে অপমানিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের শাসনতন্ত্র প্রণয়নের সময় মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার গণপরিষদ ও জাতীয় সংসদে প্রদত্ত সংশোধনীগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা না করায়, আজ দেশে নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমাকে জানা এবং তাঁকে নিয়ে গবেষণা করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি কে, কেন তাঁর সংগ্রাম, এবং তিনি কীভাবে নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছেন—এসব বিষয় সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরা দরকার। তাঁর সংসদীয় বক্তব্যগুলো আলোচনার মাধ্যমে মানুষকে জানানো প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা ১৯৭২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং একই বছরে জনসংহতি সমিতির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
এসআই/আরএন