খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক এখন এ অঞ্চলের মানুষের জীবনে এক মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতি কিলোমিটারে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই রাস্তা উদ্বোধনের এক বছরের মধ্যেই ভেঙে পড়তে শুরু করে। দুই বছরে গর্ত, তিন বছরে খানাখন্দ, চার বছরে কাদামাটি—এই রাস্তায় যেন দুর্ভোগের শেষ নেই। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো যানবাহন উল্টে যাচ্ছে, প্রাণহানি ঘটছে, কিন্তু উপায় নেই—মানুষ বাধ্য হয়ে এভাবেই চলাফেরা করছে।
ডুমুরিয়ার বিশিষ্ট নাগরিক হারুন-অর-রশীদ খান প্রশ্ন তোলেন, “আর কতদিন?” খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের দেখভালের জন্য আদৌ কি কোনো কর্তৃপক্ষ আছে?
জিরোপয়েন্টের কাছাকাছি সড়কের চিত্র যেন ফসলি মাঠ—রাস্তাটি কোথাও নেই বললেই চলে। বৃষ্টির পানি জমে এটি খালে রূপ নিয়েছে। গর্ত আর কাদা-পানিতে ভরা অসংখ্য ভাঙাচোরা জায়গা এই রাস্তাটিকে পরিণত করেছে এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতায়। জিরোপয়েন্ট থেকে চুকনগর হয়ে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রাস্তার অবস্থাও একই রকম। বছরের পর বছর ধরে কোনো কার্যকর সংস্কার না হওয়ায় জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে।
ভাঙাচোরা রাস্তায় প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা, প্রাণ হারাচ্ছেন যাত্রীরা। অথচ কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। কোনো ধরনের দৃশ্যমান উদ্যোগ চোখে পড়ে না, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও দুঃখজনক।
হ্যাঁ, বুঝতে পারি—বিগত ফ্যাসিস্ট শাসনের সময়ে দুর্নীতির মহোৎসবে এমন দুর্দশার সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার তো স্বপ্ন দেখাচ্ছেন দেশকে সিঙ্গাপুরে রূপান্তরের! তাহলে খুলনা-সাতক্ষীরা এই মহাসড়কটিকে অন্তত চলাচলের উপযোগী করে তুলছেন না কেন?
এক বছর তো কেটে গেল, এখন আর “কোমরে কুলোচ্ছে না” বলেও বাঁচা যায় না।
জিরোপয়েন্ট সংলগ্ন সড়কের অবস্থা দেখে দেশের সার্বিক অবস্থার সঙ্গে অনেক মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভবিষ্যতে আদৌ এর থেকে মুক্তি মিলবে কিনা, তা বলা কঠিন।
কেউ কি আছেন? যারা নিজেদের “কর্তৃপক্ষ” মনে করেন, তারা কি একবার চোখ মেলে তাকাবেন? প্রতিনিয়ত জনদুর্ভোগ ও প্রাণহানি থেকে মানুষকে বাঁচাতে দয়া করে এখনই এগিয়ে আসুন।
আরএন