কক্সবাজারের টেকনাফে ৯ বছরের শিশু ফারিয়া খানম জেরিনকে ধর্ষণ ও হত্যার পর লাশ গুমের চাঞ্চল্যকর মামলায় একজন আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সিদ্দিক এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইরফান আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ ইউনুছ জানান, ইরফান আদালতে ১৬ বছর বয়সে সংঘটিত এই জঘন্য অপরাধের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। বিচারক বয়স বিবেচনায় নিয়ে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে ১০ বছর এবং লাশ গুমের অভিযোগে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। তবে উভয় দণ্ড একত্রে চলবে বলে ইরফানকে মোট ১০ বছর সাজা ভোগ করতে হবে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৭ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে টেকনাফের হ্নীলায় অবস্থিত আল জামিয়া আল ইসলামিয়া দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসার ছাত্রী ফারিয়া খানম জেরিনকে একই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ইরফান মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। জেরিন চিৎকারের চেষ্টা করলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে তার গলায় প্লাস্টিকের রশি পেঁচিয়ে গিট দেয়া হয়। এরপর মরদেহ মাদ্রাসার একটি কক্ষে খাটের নিচে লুকিয়ে রাখা হয়।
ঘটনা ধামাচাপা দিতে ইরফান নিহতের মায়ের মোবাইলে ফোন করে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিবার বিষয়টি র্যাব ও পুলিশকে জানালে র্যাব তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ইরফানকে আটক করে। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মাদ্রাসার এতিমখানা ভবন ও সংলগ্ন বাউন্ডারি দেয়ালের মাঝখানের ফাঁকা জায়গা থেকে জেরিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, দণ্ডপ্রাপ্ত ইরফানের বাবা উক্ত মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
ঘটনার দুই দিন পর, ২০২৩ সালের ২৯ জুলাই জেরিনের মা টেকনাফ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার দীর্ঘ তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া শেষে আজ রায় ঘোষণা করা হলো।
এসইউ/আরএন