নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে স্ত্রী হত্যা মামলার প্রধান আসামি জামিনে বেরিয়ে এসে বাদির বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দায়ের করেছেন। ওই আসামি মো. কামাল হোসেন বাদি ইউসুফকে প্রধান আসামি করে নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও এক্সিকিউটিভ আদালতে চুরি ও আসবাবপত্র লুটের অভিযোগে দুটি মামলা করেন। এ মামলায় শুধু বাদিই নন, স্ত্রী হত্যা মামলার একাধিক সাক্ষীকেও আসামি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বাদি ইউসুফ ও স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, মূল হত্যাকাণ্ডের দায় এড়ানোর কৌশল হিসেবেই কামাল হোসেন এই মামলা করেছেন। পাশাপাশি চুরির মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে স্বাক্ষীদের সাক্ষ্য না নিয়েই তদন্ত শেষ করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে শনিবার মহজমপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত ২০২৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর। সেদিন নোয়াগাঁও ইউনিয়নের লাধুরচর গ্রামের বাসিন্দা কামাল হোসেন তার স্ত্রী ফারজানা আক্তারকে যৌতুক ও জমি লিখে দেওয়ার দাবিতে অজ্ঞাত সহযোগীদের নিয়ে নির্যাতন চালান। এতে গুরুতর আহত ফারজানাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চারদিন চিকিৎসার পর বাড়ি ফেরার পর ৬ সেপ্টেম্বর রাতে তার মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে ১৭ নভেম্বর প্রকাশিত ময়নাতদন্ত রিপোর্টে মাথায় আঘাতজনিত কারণে ফারজানার মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
পরে নিহতের বড় ভাই মো. ইউসুফ বাদি হয়ে ২৮ নভেম্বর কামাল হোসেনসহ চারজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় কামালকে গ্রেপ্তার করা হলেও পাঁচ মাস কারাভোগের পর তিনি গত ২২ এপ্রিল জামিনে মুক্তি পান। জামিনে বের হয়ে গত ২৩ ও ২৭ জুলাই তিনি ইউসুফ ও মামলার সাক্ষীদের আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করেন।
হত্যা মামলার বাদি ইউসুফ অভিযোগ করে বলেন, “আমার বোনকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এ অপরাধ আড়াল করতেই আমার ও সাক্ষীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা করা হয়েছে। তাছাড়া ওই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণও সঠিকভাবে হয়নি।”
তদন্ত কর্মকর্তা শিল্প পুলিশের পরিদর্শক কাজী গোলাম কবির অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ সত্য নয়।”
অন্যদিকে হত্যা মামলার আসামি কামাল হোসেন দাবি করেন, “স্ত্রী হত্যার মামলায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। তবে আমি কোনো মিথ্যা মামলা করিনি।”
এ বিষয়ে শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পাঠানো ক্ষুদে বার্তারও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
এইচএমআর/এসআর