রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের পদ্মার মধ্যে ১৫ চরে বন্যায় দুটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনির্দিষ্টকালের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে এই ছুটি কার্যকর করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হলেও অফিস নিয়মিত চলবে এবং শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে সময়মতো আসা যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের পদ্মার মধ্যে ১৫টি চরের মানুষ এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দি রয়েছেন। এ কারণে চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও ফলাশি ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রায় ৬০০ শতাধিক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে যাওয়া আসায় সমস্যায় পড়েছে। তাদের বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় জেলা শিক্ষা অফিসের নির্দেশে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে বিদ্যালয় দুটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তবে চৌমাদিয়া, আতারপাড়া, চকরাজাপুর, পলাশি ফতেপুর, ফতেপুর পলাশি, লক্ষীনগর, পূর্ব চকরাজাপুর, পশ্চিম চরকালিদাসখালী, পূর্ব চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছুটির বিষয়ে কোনো সিন্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মীর মামুনুর রহমান।
চকরাজাপুর ও পলাশি ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয় দুটি বন্ধ রাখা হয়েছে মর্মে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আফম হাসান।
চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র সোহেল রানা জানায়, এক সপ্তাহ যাবৎ পানির মধ্যে বাস করছি। এর মধ্যে কি করে স্কুলে যাব। তাই স্যারেরা স্কুল ছুটি দিয়েছে। ঘর থেকে বাইরে যেতে পারছিনা। ঘরের মধ্যে মাচা করে বসবাস করছি।
চকরাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান বলেন, 'বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা নিয়মিত যাচ্ছি। শিক্ষার্থীরা আসতে পারছে না। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছুটি দেওয়া হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয় ছুটি দেওয়া হয়নি।'
এদিকে, পদ্মায় ক্রমাগত পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চরের মানুষ। বন্যার কবলে পড়েছেন চরের আতারপাড়া, চৌমাদিয়া, দিয়াড়কাদিপুর, উত্তর কালিদাসখালী, দক্ষিণ কালিদাসখালী, পশ্চিম চকরাজাপুর, পূর্ব চকরাজাপুর, দাদপুর, পলাশি ফতেপুর, নিচ পলাশি ফতেপুর, জোতাশী, লক্ষীনগর, কালিদাসখালী, আম বাগান, টিকটিকিপাড়াসহ ১৫টি চরে প্রায় ১৭ হাজার মানুষ।
চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজিযুল আযম বলেন, 'প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২২০টি ও জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়কের পক্ষে ৮ শতাধিক পরিবারকে ত্রাণ দেয়া হয়েছে।'
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাম্মী আক্তার বলেন, 'বন্যাকবলিত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিস্থিতি বুঝে শিক্ষা অফিসার সিদ্ধান্ত নেবেন। দূর্দশার মধ্যে চরের মানুষ বসবাস করছে্ন। তাদের জন্য কিছু ত্রাণ দেয়া হয়েছে।
তবে সমাজের সুহৃদয়বান ব্যক্তিদের চরের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এএইচ/এমএ