কক্সবাজারের মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল হককে ‘উলঙ্গ করে’ এলাকা থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সদস্য ও মহেশখালী পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আকতার হোসেন।
গত বুধবার দুপুরে মহেশখালী পৌরসভার দীঘির পাড়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক শফিউল আলম শফির স্মরণসভায় তিনি এ বক্তব্য দেন। ওসি মনজুরুল হককে উদ্দেশ করে আকতার হোসেন প্রকাশ্যে বলেন, “ওসি সাহেব, আপনার দোকান বন্ধ করেন। ন্যাংটা করে মহেশখালী থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।”
স্মরণসভায় তিনি ওসির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাত, মামলা বাণিজ্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ মহলের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগ তোলেন।
এদিকে, আকতার হোসেনের ওই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর, ওসিকে হুমকি ও সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে বিএনপি তার সব পদ স্থগিত করেছে। বুধবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “মহেশখালী থানার ওসিকে অশোভন ভাষায় হুমকি প্রদান এবং সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপের জন্য কক্সবাজার জেলা বিএনপির সদস্য ও মহেশখালী পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আকতার হোসেনকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তার প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ স্থগিত করা হয়েছে।”
সভায় আকতার হোসেন আরও দাবি করেন, “থানার ওসির চেম্বার এখন এক ধরনের দোকানে পরিণত হয়েছে, যেখানে টাকা দিলে মামলা নেওয়া হয়। যে বেশি টাকা দেবে, মামলা তার পক্ষেই হবে। আগামীকাল থেকে যদি আপনার বিরুদ্ধে একটা অভিযোগও আসে, মহেশখালী থেকে বের করে দেব।”
তিনি আরও বলেন, “ওসি মনজুরুল হক স্থানীয় আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ও প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে মিলে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।”
হুঁশিয়ারি দিয়ে আকতার হোসেন বলেন, “ওসি সাহেব, ফাইজলামি অনেক শুনেছি, অভিযোগ অনেক পেয়েছি। মহেশখালী থেকে বের করবো—এটা আমার ওয়াদা। টাকার বিনিময়ে আওয়ামী দোসরদের সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্র করছেন—সব খবর আমার কানে আসে। আমি বেঁচে থাকতে মহেশখালীর মাটিতে আওয়ামী দোসরদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা যাবে না। আল্লাহর কসম করে বলছি, ন্যাংটা করে মহেশখালী ছাড়তে বাধ্য করবো।”
সভায় উপস্থিত বিএনপি নেতাকর্মীরাও ওসির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ওসি মনজুরুল হক চলতি বছরের ২০ মে মহেশখালী থানায় যোগ দেন।
বিএনপি নেতার বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে ওসি বলেন, তিনি এখনো ওই বক্তব্যের ভিডিও দেখেননি কিংবা শোনেননি।
মামলা বাণিজ্য ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগ বিষয়ে তিনি বলেন, “এসব সত্য নয়। তারপরও তারা কেন এসব বলছেন, সেটা তারাই ভালো বলতে পারবেন।”
কক্সবাজার জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী বলেন, “রাজনীতিতে এখন অনেক পরিবর্তন এসেছে। বিগত স্বৈরাচারী আমলের মতো এখন বিএনপির কোনো নেতা অশ্লীল বা শালীনতাবর্জিত বক্তব্য দিয়ে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।”
এসইউ/আরএন