ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক ও মালিকদের আকস্মিক কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিনে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। জেলার প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়কেও সিএনজি চালিত যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি, ব্যাটারিচালিত যানবাহনের চলাচলও জোরপূর্বক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
জেলা সিএনজি চালিত অটোরিকশা মালিক পরিবহন সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়ন যৌথভাবে তিন দফা দাবিতে এ কর্মবিরতির ডাক দেয়। দাবিগুলো হলো:
১. জেলা পুলিশ লাইনে আটক শতাধিক সিএনজি চালিত অটোরিকশা বিনাশর্তে মুক্তি দিতে হবে।
২. ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ব্যতীত জেলার অন্যান্য সকল সড়কে সিএনজি অটোরিকশার অবাধ চলাচল নিশ্চিত করতে হবে।
৩. ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।
রবিবার ভোর থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি সোমবার আরও তীব্র রূপ নেয়। পিকেটাররা ব্যাটারিচালিত যানবাহন ও লোকাল বাস চলাচলেও বাধা দিচ্ছেন। এমনকি যাত্রীদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। শহরের বিভিন্ন সড়কে লাঠিসোটা হাতে চালক ও তাদের সমর্থকদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। শিশু-কিশোররাও পিকেটিংয়ে অংশ নিচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, যানবাহনের অভাবে সাধারণ মানুষ হেঁটে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন নারী, শিশু, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী এবং অফিসগামী কর্মজীবীরা। অসুস্থ রোগীদের যাতায়াতের জন্যও কোনো বিকল্প ব্যবস্থা দেখা যায়নি।
এক ক্ষুব্ধ যাত্রী বলেন, “সিএনজির ধর্মঘট থাকতেই পারে, কিন্তু অন্য যানবাহনেও বাধা দিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করে রাখাটা অমানবিক।”
অভিযোগ উঠেছে, ধর্মঘটের সুযোগে সাধারণ যাত্রীদের হয়রানি করা হচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে জানান নাগরিকরা।
জেলা সিএনজি পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, “এক মাস ধরে শতাধিক গাড়ি আটকে রাখা হয়েছে। আমাদের তিন দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মবিরতি চলবে।”
এদিকে জনদুর্ভোগ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
অবস্থা মোকাবিলায় অন্যান্য যানবাহনের নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে।
এসআর/আরএন