ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত বর্তমানে মাদক ও মানব পাচারের জন্য একটি ‘নিরাপদ রুটে’ পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অসংখ্য মানুষ এই সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার হচ্ছে। একইভাবে, ভারত থেকেও শত শত মানুষ অবৈধভাবে প্রবেশ করছে বাংলাদেশে, যাদের অনেককেই বিজিবি নিয়মিত আটক করছে। একই সঙ্গে সীমান্ত পার হয়ে দেশে প্রবেশ করছে কোটি কোটি টাকার মাদকদ্রব্য, যা দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, মহেশপুর সীমান্তে সক্রিয় রয়েছে একাধিক পাচারকারী চক্র, যারা দীর্ঘদিন ধরে নির্বিঘ্নে মাদক ও মানব পাচার চালিয়ে যাচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ডে সীমান্ত এলাকার সাধারণ মানুষ চরমভাবে উদ্বিগ্ন। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাঝেমধ্যে কিছু পাচারকারী ধরা পড়লেও বড় ধরনের চক্রগুলো এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার মহেশপুর ৫৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গত ১৫ মাসে—২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত—মহেশপুর ও জীবননগর সীমান্ত থেকে প্রায় ১১৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকার মাদকদ্রব্য জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে। তবে স্থানীয়দের দাবি, বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ হলেও অধিকাংশ মামলায় আসামির নাম থাকে না। প্রায় সব ক্ষেত্রেই মাদক ‘পরিত্যক্ত অবস্থায়’ উদ্ধারের কথা বলা হয়, যা নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।
এদিকে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কয়েক হাজার মানুষকে এই সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পারাপারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর গুলিতে দুই বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন, যা পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলেছে।
বিজিবির পক্ষ থেকে সীমান্তে নিয়মিত টহল ও অভিযান চালানো হলেও পাচার কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে না। স্থানীয়দের প্রশ্ন, “যদি সত্যিই সীমান্তে কঠোর নিরাপত্তা ও নজরদারি থাকে, তাহলে প্রতিদিন এত পরিমাণ মাদক ও মানুষ কীভাবে পাচার হয়?”
বিষয়টি নিয়ে মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল আলমের মন্তব্য জানতে তার সরকারি নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জেইউ/আরএন