ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সেবাপ্রার্থীরা। দীর্ঘদিন ধরে পদটি শূন্য থাকায় জমি কেনাবেচা, নামজারি, ভূমি উন্নয়ন করসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে জটিলতায় পড়তে হচ্ছে ভূমি সেবাপ্রার্থীদের। এছাড়াও এই কারণে নামজারি ও ভূমি সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে এসিল্যান্ড পদটি শূন্য আছে। এর আগে কর্মরত এসিল্যান্ড আব্দুল্লাহ আল নোমান সরকার অন্যত্র বদলি হওয়ায় উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের ভূমি সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া ভূমি সেবা ও নামজারি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সরকার রাজস্বও হারাচ্ছে।
এর আগে হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুজ্জামান অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ভূমি অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করলেও তিনি এখন অন্যত্র চলে গেছেন। যার ফলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পদটিও এখন শূন্য।
রহমত আলী ও হবিবর রহমান নামে হরিপুরের দুই প্রবীণ ও স্থানীয় ব্যক্তি বলেন, এক মাস মাস আগে নামজারির জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু এখনো কোনো অগ্রগতি হয়নি। ইউএনও বা এসিল্যান্ড না থাকায় এসব সেবা পেতে বিলম্ব হচ্ছে।
হরিপুর উপজেলার কয়েকজন দলিল লেখক জানান, উপজেলা ভূমি অফিসে এসিল্যান্ড না থাকায় বিভিন্ন সেবা পেতে তাদের বেগ পেতে হচ্ছে। জমি কেনা-বেচা নামজারি, বাটোয়ারা এবং খাজনা পরিশোধ ছাড়া জমি হস্তান্তর করা যায় না। এসিল্যান্ড না থাকায় এসব কাজ অনেক সময় আটকে থাকে।
এ বিষয়ে বকুয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, কয়েকমাস ধরে এসিল্যান্ড না থাকায় নামজারি ও খাজনা খারিজের কাজে একটু সময় লাগছে। এতে সেবাগ্রহীতাদের ঠিকমতো সেবা পেতে কিছুটা দেরি হয়। এসিল্যান্ড থাকলে আমাদের কাজ করাটা সহজতর হয়। সবাই দ্রুত মিউটেশন সেবা পাবে।
এ বিষয়ে হরিপুর উপজেলার অতিরিক্ত দ্বায়িত্বে থাকা রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাফিউল মাজলুবিন রহমান বলেন, এসিল্যান্ড পদে পদায়ন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অফিসিয়ালি জানানো হয়েছে। বর্তমানে ভূমি অফিসের সেবা কার্যক্রম যাতে ব্যাহত না হয় সেই অনুযায়ী নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে আমার আইডি তৈরি হলে জমি সংক্রান্ত মিউটেশন সেবা চালু হবে। আশা করছি, দ্রুতই জটিলতা কেটে যাবে।
এ প্রসঙ্গে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা জানান, এসিল্যান্ড প্রশাসনের ও ভূমি সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ। এখানে লোকবল না থাকলে নানা সমস্যার সৃষ্টি হবে। লোকজন সেবা বঞ্চিত ও হয়রানির শিকার হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আমার ইউএনও অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে কাজ করছে। আর তাছাড়া হরিপুরের সহকারী কমিশনার ভূমি পদে পদায়নের জন্যও ইতোমধ্যেই আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে অনুরোধ করেছি। আশা করছি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে বলেও জানান তিনি।
এএ/এসআর