শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ে ১০ থেকে ১২ বছর বয়সী একটি অসুস্থ মাদি বন্য হাতিকে চিকিৎসা দিয়েছে বন বিভাগ। বৃহস্পতিবার (১ মে) সকালে নয়াবিল ইউনিয়নের দাওধারা কাটাবাড়ি পাড়া এলাকায়, গারো পাহাড়ের ভেতরে এ চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ি এলাকায় প্রায় শতাধিক বন্য হাতি কয়েকটি উপদলে বিভক্ত হয়ে বিচরণ করছে। খাবারের সন্ধানে তারা কখনো ধানক্ষেতে, কখনো লোকালয়ে হামলা চালায়। ফসল ও বাড়িঘর রক্ষা করতে গ্রামবাসীরা বিভিন্নভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। কেউ কেউ ধানক্ষেতে বৈদ্যুতিক তার বা জেনারেটরের মাধ্যমে ফাঁদ পেতে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করেন।
এদিকে, এসব ঘটনায় এলাকায় বাইরে থেকেও দলবদ্ধভাবে লোকজন এসে তামাশা দেখেন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে হাতি তাড়াতে অংশ নেন। কেউ কেউ বন্য হাতির দিকে পাথর ছোড়েন কিংবা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। উপজেলার দাওধারা কাটাবাড়ি পাহাড়ে নির্মাণাধীন নতুন পর্যটন এলাকার পাশে এক আঘাতপ্রাপ্ত বন্য হাতিকে দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তারা বন বিভাগকে খবর দিলে, বন বিভাগের কর্মকর্তারা ও মেডিকেল টিমের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত হাতিটিকে চিকিৎসা প্রদান করেন।
মেডিকেল টিমের প্রধান, গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রায় ৩-৪ মাস আগে বল্লম জাতীয় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হাতিটিকে আঘাত করা হয়েছিল। প্রায় ৩-৪ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের ওই আঘাতের গভীরতা ছিল প্রায় ৬ ইঞ্চি। এতে হাতিটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তার দেহের গুরুত্বপূর্ণ টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা পাহাড়ে গিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে ড্রেসিং করেছি এবং তাকে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করে চিকিৎসা সেবা দিয়ে বনে ছেড়ে দিয়েছি। আশা করছি হাতিটি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন: নালিতাবাড়ী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. সাকিব হোসেন সাগর, গাজীপুর সাফারি পার্কের ল্যাব টেকনিশিয়ান আতিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, সহকারী টেকনিশিয়ান মোস্তফা কামাল, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. শাহিন কবির, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুমন সরকার, ওয়াইল্ডলাইফ রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল আমীন, মধুটিলা ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলী, সমশ্চুড়া বনবিট কর্মকর্তা কাউছার হোসেনসহ অন্যান্য বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
এমএস/আরএন