নাটোরের গুরুদাসপুরে মসজিদের আয়-ব্যয়ের হিসাব চাওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) জুমার নামাজ শেষে গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের রানীগ্রাম পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদে এ সংঘর্ষ ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রানীগ্রাম মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও যুবলীগ নেতা লাবলুর রহমান দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে মসজিদের কোনো হিসাব না দেওয়ায়, কমিটির বৈঠকে তাকে হিসাব দিতে বলা হয়। এ সময় বিএনপি নেতা আব্দুল হাকিমের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়, যা একপর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়। পরে বিষয়টি রাজনৈতিক রূপ ধারণ করে, এবং আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে রয়েছেন-বিএনপি কর্মী আব্দুল হাকিম (৩৮), আনসার প্রামাণিক (৬৫), রফিকুল প্রামাণিক (৫০) এবং আওয়ামী লীগ কর্মী বাবুল প্রামাণিক (৫০), সুজন আহমেদ (৩০), তারিকুল ইসলাম (২৫) ও হারেজ আলী (৪০)। গুরুতর আহত অবস্থায় আব্দুল হাকিমকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিএনপি নেতা এরশাদ আলী অভিযোগ করে বলেন, “মসজিদের হিসাব চাইতেই যুবলীগ নেতা লাবলু তার অনুসারীদের নিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ অতর্কিতে হামলা চালায়। আমার ভাই আব্দুল হাকিমের ডান হাতের রগ কেটে ফেলা হয়। আরও তিনজন গুরুতর আহত হন। আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
অন্যদিকে, যুবলীগ নেতা লাবলুর রহমান দাবি করেন, “বিএনপি কর্মীরাই আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমি অসুস্থ হয়ে মসজিদের মেঝেতে পড়ে যাই। কীভাবে ঘটনা ঘটেছে, আমি জানি না। আমাদের পক্ষের চারজন আহত হয়েছেন, তারা গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।”
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রাজিব হোসেন জানান, “আব্দুল হাকিম নামে এক ব্যক্তির ডান হাতের রগ কেটে যাওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও কয়েকজন আহত ব্যক্তিকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, “খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে স্থানীয় প্রশাসন অতিরিক্ত নজরদারি জোরদার করেছে।
এমএ/আরএন