চলতি বোরো মৌসুমের শুরুতেই তিস্তা সেচ প্রকল্পের পানি পেয়ে খুশি কৃষকরা। সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে সেকেন্ডারি, টারসিয়ারি সহ ছোট-বড় সব খালে ছাড়া হয়েছে ভূ-উপরিস্থ উর্বর পানি। এই পানিতে চাষ হবে তিস্তার কমান্ড এরিয়ার নীলফামারী, ডালিয়া ও সৈয়দপুর ডিভিশনের প্রায় ৫৫ হাজার হেক্টর জমি।
তবে প্রধান খাল, সেকেন্ডারি, টারসিয়ারি সহ ছোট-বড় সব খাল সংস্কার ও পুনঃখনন প্রকল্পের আওতায় গত বছরের তুলনায় এ বছর বাড়ানো হয়েছে ১০ হাজার হেক্টর জমি। প্রকল্প শেষ হলে আগামীতে বাড়বে আরও ৫০ হাজার হেক্টর জমি। প্রতি একর জমিতে মাত্র ৪৮০ টাকায় পুরো মৌসুমে পানি পাচ্ছেন চাষীরা। কম খরচে এই পানিতে সাশ্রয় হবে সার ও জ্বালানী।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সেচের পানি ব্যবহার করে প্রায় ২ কোটি টাকার জ্বালানী এবং ১৫ কোটি টাকার সারের সাশ্রয় হবে। সংস্কার ও পুনঃখনন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে তিস্তার কমান্ড এরিয়া জুড়ে ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা মিলবে, যা থেকে বাড়তি উৎপাদন হবে ২৬ হাজার মেট্রিকটন ধান।
নীলফামারী সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের চাঁদেরহাট বিশমুড়ি এলাকার কৃষক তৈয়ব আলী বলেন, এ বছর জমিতে আগাম পাওয়া যাচ্ছে তিস্তার পানি। বোরো ধানের চারা রোপণও শুরু করেছি। টারসিয়ারি ও সেকেন্ডারি খালগুলো সংস্কারের ফলে পানির অপচয়ও কম হচ্ছে।
ওই এলাকার কৃষক বাবুল হোসেন বলেন, ক্যানেলের পানিতে আবাদ করছি। এতে খরচ কম, সময়মতো পানিও পাওয়া যাচ্ছে। শ্যালো মেশিন দিয়ে আবাদ করলে খরচ বেশি পড়ে।
নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান বলেন, তিস্তার পানি সরাসরি নদীর পানি। নদীর পানি জমির উর্বরতা বাড়াতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। ফলন ভালো হয় এবং সার কম লাগে। তিস্তার ভূ-উপরিস্থ পানি দিয়ে সেচ দেয়ার ফলে এ অঞ্চলের ভূ-গর্ভের পানির স্তর রিচার্জ হয়ে অনেকটা উপরে উঠে এসেছে। সেচ পাম্প বসিয়ে এই পানি থেকে সহজেই সেচ সুবিধা পাওয়া যাবে। এছাড়া বৃক্ষরোপণ করা হচ্ছে, যা পরিবেশ ও জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষা করবে।
নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ড সৈয়দপুর ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, গত বছর তিস্তার কমান্ড এলাকার ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে কৃষকরা সেচ সুবিধা পেয়েছিলেন। এ বছর তা বাড়িয়ে চলতি বোরো মৌসুমে ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেয়া হচ্ছে।
এবি/আরএন