যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৭৭ জন। এ হামলায় নিহত ও আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বুধবার সকাল থেকে তিনটি স্থানে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করে ইসরায়েল। স্থানীয় সময় বিকেলের দিকে দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি এলাকায় হামলায় বহু মানুষ হতাহত হন।
গাজা সিটির পূর্বাংশের শুজাইয়া এলাকায় হামলা হলে সেখানে আশ্রয় নেওয়া বিপুল সংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষের মধ্যে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এছাড়া জেইতুন মহল্লার একটি ভবনে আঘাত হানলে একটি পুরো পরিবারসহ কমপক্ষে ১০ জন নিহত হন।
আল জাজিরার গাজা সিটি প্রতিনিধি হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, একজন বাবা, মা এবং তাদের তিন সন্তান ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার ভাষায়, যুদ্ধবিরতির পরও অব্যাহত বোমাবর্ষণে সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এ হামলার ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে ইসরায়েল ও হামাস। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, খান ইউনুস এলাকায় তাদের সেনাদের ওপর গুলি চালানো হলে তারা পাল্টা হামলা করতে বাধ্য হয়।
অন্যদিকে, হামাস এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। সংগঠনটি বলেছে, ইসরায়েল ভুয়া অজুহাত দেখিয়ে নতুন করে হামলা চালিয়ে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজায় গণহত্যা চালানোর উদ্দেশ্যে পরিস্থিতি ইচ্ছাকৃত ভাবে উত্তপ্ত করে তুলছেন।
গাজা উপত্যকায় স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত একটি প্রস্তাব পাশ করেছে। প্রস্তাবে গাজায় একটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন এবং একটি বোর্ড অব পিস গঠন করে শাসন ব্যবস্থা তদারকির কথা বলা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে গাজার নিয়ন্ত্রণ থেকে হামাসকে সরে দাঁড়াতে বলা হয়েছে। তবে কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে এমন হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।
গাজায় তীব্র হামলার পাশাপাশি বুধবার লেবাননেও ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান চালায়। এর আগের দিন দক্ষিণ লেবাননের একটি ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১৩ জনের বেশি নিহত হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে গেছে।
গাজায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং আরও ১ লাখ ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।