Thursday | 23 October 2025 | Reg No- 06
Epaper | English
   
English | Thursday | 23 October 2025 | Epaper
BREAKING: পলাতক ব্যক্তিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না: আইন উপদেষ্টা      শেখ হাসিনাকে শাস্তি না দিলে শহীদ-আহতদের প্রতি অবিচার হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল      সাইফ ও সৌম্যর রেকর্ড জুটিতে ২৯৭ রানের লক্ষ‍্য দিল বাংলাদেশ      দেশকে এগিয়ে নিতে নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজন: মির্জা ফখরুল      টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ      সহজেই জয় পেল অস্ট্রেলিয়া      ইসরায়েলের পার্লামেন্টে পশ্চিম তীর দখলের বিল পাস      

খননের ৩ বছরেই ভরাট জয়পুরহাটের চিরি নদী

Published : Wednesday, 22 October, 2025 at 1:36 PM  Count : 37

শুষ্ক মৌসুমে পানির সুবিধা পাবে কৃষকরা এমন উদ্দেশ্য নিয়ে কোটি টাকায় খনন কার্যক্রম পরিচালনা করা হলেও খননের ৩ বছর যেতে না যেতেই আবারও ভরাট হয়ে গেছে জয়পুরহাটের চিরি নদী। 

প্রায় ২২ কিলোমিটার এ নদীর কোথাও কোথাও ভরে গেছে কচুরিপানায়। আবার কোথাও কোথাও পানি থাকলেও, অনেক স্থানে নেই। এতে নদী খননের পর যে সুফল পাওয়ার আশা ছিল তা পাচ্ছেন না নদী পাড়ের বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও নদী আন্দোলনের নেতারা মনে করছেন, অপরিকল্পিত খননে বালু ও মাটি আবারও নদীতে মিশে যাওয়া, বর্জ্য ফেলা, সচেতনতা ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আবারও ভরাট হচ্ছে এই নদী। তাই নদীর নাব্য টিকিয়ে রাখতে শুধু খনন করলেই হবে না, এর রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন।

জানা গেছে, জয়পুরহাট জেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে চারটি নদী। এর মধ্যে সদর উপজেলা থেকে আক্কেলপুর পর্যন্ত প্রায় ২২ কিলোমিটার রয়েছে চিরি নদী। এটি ছোট যমুনার একটি শাখা নদী হিসেবে পরিচিতি। যা জয়পুরহাটের ছোট যমুনা নদীর খনজনপুর কুটিবাড়ী এলাকা থেকে বের হয়ে আক্কেলপুর উপজেলার তুলসীগঙ্গা নদীতে গিয়ে মিলিত হয়েছে।

২০১৯ সালের মার্চ মাসে প্রায় ১২১ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি নদীর খনন কাজ শুরু হয়। শেষ হয় ২০২২ সালের জুন মাসে। নদী খননের প্রকল্পের উদ্দেশ্যে ছিল শুষ্ক মৌসুমে জমিতে সেচ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সারা বছর সেচ সুবিধা নিশ্চিত করা, পানি নিষ্কাশন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে বন্যার ঝুঁকি কমিয়ে আনা, পুনঃখননের মাধ্যমে পুনরুজ্জীবিত করা, নৌ চলাচলের মাধ্যমে সহজ যোগাযোগ নিশ্চিত করা, পরিবেশ ও আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন সাধন করা। কিন্তু চিরি নদীতে এসব বেশির ভাগ উদ্দেশ্যে বাস্তবায়ন হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, নদী খননের ফলে সারা বছর পানি থাকার আশা থাকলেও শুকনো মৌসুমে কোথাও পানি থাকছে, কোথাও থাকছে না। নদী খনন করার সময় বাঁধের ওপর রাখা মাটি আবারও নদীতে মিশে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও নদী ভরে আছে কচুরিপানায়। কোথাও পানি থাকলেও ময়লার কারণে হয়ে পড়েছে ব্যবহার অযোগ্য। এতে দিন দিন নদীটি নাব্যতা হারিয়ে ফেলছে। আবার পাড়ের মাটিও কেটে নেওয়া হয়েছে অনেক স্থানে। ফলে নদীগুলোর কোনো রক্ষণাবেক্ষণ নেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। 

এ কারণে নদী রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি সচেতন মহলের।

সদরের খনজনপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সোবাহান বলেন, ‘নদী খননের আগে আমাদের বাড়ির কাছে চিরি নদীতে কিছু পানি থাকত। আমরা প্রতিদিনের কাজে পানি ব্যবহার করতাম। কিন্তু খননের পর আর পানি থাকছে না। নদী সংস্কার করেই আমাদের অসুবিধা হয়ে গেছে। পানি পাচ্ছি না, আবার কচুরিপানায় ভরে গেছে।’

একই এলাকার আজাদ হোসেন বলেন, ‘ছোটবেলায় নদীতে অনেক মাছ ধরা হতো। মনে হয়েছিল নদী খনন করার পর নাব্যতা ফিরে আসবে। কিন্তু এখন তা দেখা যাচ্ছে না। বৃষ্টি হলেও বেশির ভাগ জায়গায় পানি নেই। আগে মাছ ধরা হতো। এখন পানি না থাকার কারণে মাছ ধরা যায় না। গোসল করা যায় না। নদী আমাদের কোনো উপকারে আসছে না।’

কুঠিবাড়ী ব্রিজ এলাকার ফারুক হোসেন বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা খরচ করে নদী খনন করা হলো, পানি থাকবে বলে। কিন্তু নদীতে কোনো পানি নেই। তাহলে জনগণের কী লাভ হলো? আমরা তো কোনো সুবিধা পাচ্ছি না। নদীর পাড়ের মাটি বৃষ্টিতে ধুয়ে আবারও ভরাট হয়ে যাচ্ছে।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের জয়পুরহাট জেলার সমন্বয়ক লুৎফুল্লাহিল কবির বলেন, ‘চিরি নদী খনন করা হয়েছে পুরোপুরি অপরিকল্পিত ভাবে। নদী খননের সময় মাটি ও বালু নদীর পাড়ের ওপর রাখা হয়েছিল। পরে বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে আবার নদীতে পড়ে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে কোনো সুফল পাচ্ছেন না নদী পাড়ের কৃষকরা। জনগণের কোটি কোটি টাকা খরচ করে নদী খনন করে কোনো লাভই হয়নি।’

নদী রক্ষাসহ পরিবেশ রক্ষা করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

জয়পুরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রিয়াদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘১২০ কোটি ৬৯ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ব্যয়ে জয়পুরহাটের চারটি নদীর খনন কাজ করা হয়েছে। এ থেকে সাধারণ মানুষ উপকৃত হচ্ছে এমন দাবী করে বলেন- বন্যার ঝুঁকি একেবারে কমে গেছে। তবে নদীগুলো বড় কোনো নদীর সঙ্গে সংযুক্ত না থাকার কারণে পানি কম থাকে।’

তিনি বলেন, ‘চিরি নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে বা কচুরিপানা জমে গেছে এ বিষয়ে আমার জানা নেই। বরাদ্দপ্রাপ্তি সাপেক্ষে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হবে।’

এসআই/এমএ
সম্পর্কিত   বিষয়:  খনন   জয়পুরহাট   চিরি   নদী  


LATEST NEWS
MOST READ
Also read
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000.
Phone: PABX- 41053001-06; Online: 41053014; Advertisement: 41053012.
E-mail: [email protected], news©dailyobserverbd.com, advertisement©dailyobserverbd.com, For Online Edition: mailobserverbd©gmail.com
🔝
close