বাজারে নকল পণ্য বিক্রি হওয়ায় তা ক্রয়ের মাধ্যমে ভোক্তাগণ প্রতারিত ও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বলে মনে করছেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে মহাপরিচালক ফারুক আহম্মেদ।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কাওরান বাজারে ভোক্তা অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে সুপারশপসমূহের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান।
ফারুক আহম্মেদ বলেন, ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ, মানহীন, অবৈধ পণ্য কিংবা নির্ধারিত মূল্যের অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করার সুযোগ নেই। এগুলো দন্ডনীয় অপরাধ। বিদেশী পণ্য বিক্রি করতে আমদানী সিল ও সরকারি কর্তৃপক্ষের সিল থাকতে হয়। কিন্তু বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন অনলাইনে ও বিভিন্ন সুপারশপ এর ব্রান্ড ভ্যালু কাজে লাগিয়ে নকল পণ্য বিক্রি করছে মর্মে আমাদের কাছে অভিযোগ আসছে, যা অত্যন্ত পীড়াদায়ক। এক্ষেত্রে ভোক্তাগণ প্রতারিত হচ্ছেন ও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। তাই সুপারশপগুলোকে নিজেদের স্বার্থেই পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে পণ্যের সঠিকতা যাচাই করে নিতে হবে।
অভিযোগ ও তদন্ত বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীগণ ভোক্তাদের স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন, তাদের সুবিধা-অসুবিধা নিয়মিত পর্যালোচনা করেন এবং প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে পণ্য সরবরাহ করে ও ক্রমাগত ভোক্তার সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনায় প্রয়াসী হন। ভোক্তা-স্বার্থ সংরক্ষণ করে ব্যবসা পরিচালিত হলে ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক তৈরি হয়, যা ন্যায্যতাভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে সহায়তা করে থাকে।
সুপারশপ সমূহের পক্ষে উপস্থিত কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে হলে ও নিজ নিজ কাস্টমারদের ধরে রাখতে হলে সুলভমূল্যে মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করার বিকল্প নেই। তারা তাদের পণ্য ও প্রদত্ত সেবার মান বৃদ্ধিতে সচেষ্ট থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, প্রতিটি সুপারশপ কর্তৃপক্ষ নিয়মিত আউটলেট চেক করবেন, মানহীন, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য থাকলে তা অপসারণ করবেন ও আউটলেট পরিচালকারী কর্মকর্তাদের কার্যক্রম নিয়মিত তদারকি করবেন, তাদের জন্য ভোক্তা অধিকার আইনসহ অন্যান্য বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণের আয়োজন করবেন। চটকদার বিজ্ঞাপন দ্বারা ভোক্তাদের প্রলুব্ধ করা যাবে না এবং অফারে মানহীন পণ্য বিক্রি করা যাবে না। ভোক্তাগণ কোন পণ্য ক্রয় করে সংক্ষুব্ধ হলে কত সময়ের মধ্যে কোথায় অভিযোগ জানাবেন সে কর্মকর্তা ও বিকল্প কর্মকর্তার নাম ও মোবাইল নম্বর আউটলেটের সামনে দৃষ্টিগোচর স্থানে প্রদর্শন করতে হবে এবং সব আউটলেটে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করতে হবে। তাছাড়া সুপারশপ ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কনজুমার-বান্ধব এন্টারপ্রাইজ এসোসিয়েশন গঠনের সম্ভাব্যতা যাচাই করারও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় স্বপ্ন, আগোরা, ইউনিমার্ট, প্রিন্স বাজার, আমানা বিগ বাজার, ট্রাস্ট ফ্যামিলি নীডস সুপার শপ এর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।
অধিদপ্তরের উপপরিচালক (কার্যক্রম) আতিয়া সুলতানা, উপপরিচালক (অভিযোগ) মাসুম আরেফিন, উপপরিচালক (প্রচার ও প্রশিক্ষণ) আফরোজা রহমান, উপপরিচালক (তদন্ত) শাহনাজ সুলতানা, উপপরিচালক, ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয় বিকাশ চন্দ্র দাস, সহকারি পরিচালক (তদন্ত) নাসরিন সুলতানা, সহকারী পরিচালক (অভিযোগ) মোঃ শাহ আলম, সহকারি পরিচালক, ঢাকা জেলা কার্যালয় মোঃ হাসানুজ্জামান আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
এসআর