বরগুনার আমতলীতে মা ইলিশ রক্ষায় অবরোধ কালীন সময়ের চাল না পেয়ে চাওড়া ইউনিয়নের ২৫-৩০ জন জেলে সোমবার দুপুরে আমতলী উপজেলা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভ শেষে তারা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। ইউএনও অভিযোগটি আমলে নিয়ে ৩ সদস্য বিষিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটিকে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মদ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আমতলী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চাওড়া ইউনিয়নের ৬৪২ জন জেলে রয়েছে। গত ৭ অক্টোবর সকল জেলেদের মধ্যে ট্যাগ অফিসারের উপস্থিততে গত ১৪ অক্টোবর ২৫ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। চাল বিতরণের ৬ দিন পর কালবাড়ি, কাউনিয়া, পাতাকাটা ও চন্দ্রা গ্রামের অর্ধশতাধিক জেলে সোমবার দুপুরে আমতলী উপজেলা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ শেষে তারা আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন জেলে কার্ড থাকা সত্ত্বেও তাদের চাল দেওয়া হয়নি।
কালিবাড়ি গ্রামের জেলে মিলনহাওলাদার বলেন, আমি একজন কার্ডধারী জেলে। আমার জেলে কার্ড নম্বর-১০০৪০৯০০৪৭০০০০৩৩৪। আমাকে চাল দেওয়া হয়নি।
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, মাস্টার রোলে আমার নাম রয়েছে। তাহলে আমার চাল কে নিয়েছে। আমি জানতে চাই।
এভাবে কার্ডধারী চালিতাবুনিয়া গ্রামের জেলে নাসির উদ্দিন, পাতাকাটা গ্রামের মো. নূর মোহাম্মদ হাওলাদার, চন্দ্রা গ্রামের কেরামত আকন, কাউনিয়া গ্রামের আর্শেদ পহলান ও ঘটখালী গ্রামের মো. আবু বক্তর সিদ্দিকও চাল না পাওয়ার অভিযোগ করেন। এসকল বিক্ষুদ্ধ জেলেরা চাল না পেয়ে সোমবার দুপুরে তাদের চাল পাওয়ার দাবীতে আমতলী উপজেলা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে তারা আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগের পর সদ্যতা যাচাইয়ের জন্য ইউএনও তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির সদস্যরা হলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাসেল, মেরিন ফিসারিজ অফিসার মো. অলিউর রহমান ও উপজেলা ফেসিলিটেটর মো. মাইনুল ইসলাম। কমিটিকে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।
কমিটির প্রধান আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাসেল বলেন, এখনো চিঠি পাইনি চিঠি পাওয়া গেলে তদন্ত শুরু করা হবে।
চাওড়া ইউপি চেয়ারম্যান আখতারুজ্জান বাদল খানের মোবাইল শোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
প্যানেল চেয়ারম্যান মো. হারুন অর রশিদ বলেন, তালিকা অনুযায়ী ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতে সকল জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়েছে।
আমতলী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তন্ময় কুমার দাশ বলেন, তালিকা অনুযাায়ী ৬৪২ জন জেলেদের সকল চাল উপজেলা পরিষদ থেকে ইউনিয়ন পরিষদে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেখানে ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতে চাল বিতরণ করা হয়েছে। ২০২০ সালে জেলেদের তালিকা হাল নাগাদ করা হয়েছে। ২০১৪ সালের তালিকা থেকে জেলে নয় এরকম অনেক জেলেদের নাম বাদ গেছে। বাদ পরা জেলেদের নিকট থেকে জেলে কার্ড ফেরৎ আনা সম্ভব হয়নি। হয়তোবা বাদ পরা এসকল জেলেরা এখন চাল চাচ্ছে। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, চাল বিতরণে অনিয়ের অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তিন সদস্য বিষিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ১৫ কার্য দিবসের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
এএসকে/ এসআর