নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার লুনেশ্বর ইউনিয়নের নক্তি বিল জলমহালের মাছ লুটে নেওয়া ও মাছ চাষে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতা হবিক মিয়া ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জলমহালের ইজারাদার মো. খায়রুল ইসলাম গত শনিবার নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। জলাশয়টি নিয়ে এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সোমবার নক্তি বিল জলাশয়ের ইজারাদার খায়রুল ইসলাম আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে দেখা করে মাছ ধরার বিষয়টি জানিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহদৎ নূর রহমান প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ভূমি মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার লুনেশ্বর ইউনিয়নের নক্তি বিল জলমহালে মাছ চাষ ও আহরণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বাংলা ১৪৩২ থেকে ১৪৩৭ সাল পর্যন্ত ৬ বছরের জন্য ইজারা নেওয়া হয়েছে উপজেলার নারাচাতল মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে। ইজারার মূল্য বাবদ ১২ লাখ ৯৯ হাজার ২শত ৪৫ টাকা প্রদান করা হয়েছে। পরে ওই জলমহালে ৫ লাখ টাকার মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়।
জলমহালটি নিয়ে উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হবিক মিয়া ইজারাদারের সাথে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলছিল। গত শনিবার (১৮/১০/২০২৫) দুপুরে হবিক মিয়া, তার ভাই সকাল মিয়া, সবুজ মিয়া সহ ১৭-১৮ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জলমহালে প্রবেশ করে বাঁশ ও জাল দিয়ে তৈরি করা বায়না (বেড়া) মাছ ধরে নিয়ে যায়। বেড়া কেটে দেওয়ায় বিলের মাছ পাশ্ববর্তী খালে চলে যায়। এতে ইজারাদারের প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। পরে জলমহালের ইজারাদার মো. খায়রুল ইসলাম এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। জলমহালের পাহাড়াদার মো. নূরুল ইসলাম আটপাড়া থানায় মামলা করতে গেলে থানার ওসি মো. আশরাফুজ্জামান নানা অজুহাতে মামলা গ্রহণ করেননি।
লুনেশ্বর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হবিক মিয়া মাছ ধরার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ইজারাদার নক্তি বিলের উজানে বগির খালে মাছ ধরার জন্য আমাদের সাথে চুক্তি করেছে। এখন তারা অভিযোগ করছে আমরা মাছ ধরে নিয়ে গেছি। আমরা মাছও ধরিনি, বেড়াও ভাঙিনি। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে। বিষয়টি থানার ওসি সাহেবকে জানানো হয়েছে।
আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, নক্তি বিল জলমহালটি প্রশাসনের কাছ থেকে ইজারা নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন দেখবে। এখানে পুলিশের করণীয় কিছু নেই। মারামারি বা কোনো ধরনের আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।
আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহদৎ নূর রহমান বলেন, জলাশয় নিয়ে সমস্যার কথা শুনেছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন দেখবে। আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করতে হবে।
এসআই/আরএন