ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরার বাসিন্দারা যুগ যুগ ধরে বিদ্যুৎ সমস্যায় জর্জরিত। দিনে বা রাতে এই উপকূলের বাসিন্দারা ৩ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ পেতেন না। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন ও সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন এখানকার মানুষ। শুধুমাত্র বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে এই উপকূলের জীবনমান ও সামগ্রিক উন্নয়ন থমকে ছিল।
অবশেষে সেই অভিশাপমুক্ত হয়ে অন্ধকার যুগ থেকে আলোর পথে ফিরছে মনপুরা উপকূল। নদীর তলদেশে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত করে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুতের আওতায় আনা হবে এই দুর্গম জনপদকে — এমনটাই জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নূর আহমদ এবং অতিরিক্ত সচিব (নবায়নযোগ্য জ্বালানি অনুবিভাগ) কে. এম. আলী রেজা।
শুক্রবার সকালে দুই অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধি দল মনপুরা সফর করেন। পরে বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে উপজেলা হলরুমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বির সভাপতিত্বে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় সাংবাদিকরা মনপুরার বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
পরে অতিরিক্ত সচিব নূর আহমদ বলেন, “মনপুরার মানুষ যেন ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সুবিধা পান, সে লক্ষ্যে দুটি টেকনিক্যাল রুট বিবেচনায় রয়েছে। একটি হলো তজুমুদ্দিন উপজেলা থেকে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে চরকলাতলী হয়ে মনপুরা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান। অন্যটি হলো চরফ্যাশন উপজেলা থেকে নদীর তলদেশ দিয়ে সরাসরি মনপুরায় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন।”
অতিরিক্ত সচিব কে. এম. আলী রেজা বলেন, “সাবমেরিন ক্যাবলের পাশাপাশি আমরা নবায়নযোগ্য শক্তির সমান্তরাল ব্যবহারের বিষয়টিও বিবেচনা করছি, যাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগেও এই উপকূলের মানুষ অন্ধকারে না থাকে।”
এই সময় উপস্থিত থেকে দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান মনপুরা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান মিলন মাতাব্বর, মনপুরা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা আমীমুল ইহসান জসীম, মনোয়ারা বেগম মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম শাহীন এবং প্রেসক্লাব সভাপতি অহিদুর রহমান।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শেখ জাকিরুজ্জামান (ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ওজোপাডিকো), নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী রোকনুজ্জামান, পরিচালক মনিরুজ্জামান, পরিচালক মো. আবদুল আজিজ, উপসচিব মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, নির্বাহী প্রকৌশলী নুর মোহাম্মদ এবং সিনিয়র সহকারী সচিব হাসান সাদী।
এপি/আরএন