মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় শীতকালীন বিষমুক্ত টমেটো চাষে লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। কম পুঁজিতে লাভজনক টমেটো চাষে স্থানীয় কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। ফলে শীত মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে অন্যান্য আগাম শাকসবজির পাশাপাশি উন্নত জাতের টমেটো চাষও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কমলগঞ্জ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নগর গ্রামে অনেকেই ৮০-৯০ দিনের টমেটো চাষ করে বেশি লাভের স্বপ্ন দেখছেন। উপজেলার মাধবপুর, মুন্সিবাজার, আদমপুর, আলীনগর ও ইসলামপুর গ্রামের বিভিন্ন জমিতে বিষমুক্ত টমেটোর আবাদ চোখে পড়ার মতো। ক্ষেতজুড়ে সারি সারি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে ছোট-বড় টমেটো। প্রতিদিন পরিপক্ক হচ্ছে অসংখ্য টমেটো। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এসব টাটকা টমেটো পাইকারি ও খুচরা বাজারে বিক্রি শুরু হবে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, ইয়াকুব আলীর এই সফলতা এলাকাবাসীর মধ্যে নতুন অনুপ্রেরণা জাগিয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ সম্প্রসারণে আগ্রহী। শুধু আর্থিক লাভ নয়, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি এবং সরকারি সহায়তার সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষি খাতে কীভাবে পরিবর্তন আনা যায়—ইয়াকুব আলীর খামার এখন তারই জীবন্ত উদাহরণ।
কৃষক মো. ইয়াকুব আলী বলেন, “৬০ শতাংশ জমিতে টমেটো ও বেগুন চাষে খরচ হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকা। বর্তমানে ফুল-ফলে জমি ভরপুর। আশা করছি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জমিতে উৎপাদিত বিষমুক্ত টমেটো বাজারজাত শুরু করতে পারব। এখন টমেটোর বাজার মূল্য প্রতি কেজি ১২০-১৩০ টাকা। আমি আশা করছি প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারব। এতে খরচ বাদে প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মুনাফা হবে।”
সবজি চাষকে অত্যন্ত লাভজনক উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “অনেকে বলেন কৃষিতে আর তেমন লাভ নেই, কিন্তু আমি বলব—সঠিক পদ্ধতি ও পরিকল্পনা নিয়ে চাষাবাদ করলে অবশ্যই কৃষি থেকে লাভবান হওয়া যায়।”
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, “গত কয়েক বছরে টমেটোর বাজার ভাল থাকায় চাষও বেড়েছে। আমন ধান কাটার পরপরই শীতকালীন আগাম জাতের টমেটো উৎপাদন করা যায়। প্রথম দফায় বাজারে বেশি দাম পাওয়ায় কৃষকরা লাভবান হন। গাছে ফলনও সন্তোষজনক। তাই চাষিরা টমেটো বিক্রি করে ভালো আয়ের আশা করছেন। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে কৃষকদের উচ্চ ফলনশীল (হাইব্রিড) জাতের টমেটো চাষের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”
এসএস/আরএন